Image description

হাতি আর মানুষের দ্বন্দ্বে যাতে কারও জীবন না যায়, সে জন্য চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর লোকালয়ে সচেতনতা ক্যাম্প করেছেন চট্টগ্রাম বন বিভাগ। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মানুষ-হাতি সংঘাত কমানো এবং হাতি সংরক্ষণে স্থানীয়দের সচেতনতামূলক প্রচারণা ক্যাম্প করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বাঁশখালী জলদী রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ।

তিনি বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে বন বিভাগ ও এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্যরা মানুষ-হাতি সংঘাত কমানো এবং হাতি সংরক্ষণে স্থানীয়দের সচেতন করেন। ক্যাম্পের মাধ্যমে স্থানীয় জনসাধারণকে সচেতন করা, হাতি-মানুষ সংঘাত নিরসনের জন্য প্রশিক্ষণ এবং ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করাসহ হাতির প্রাকৃতিক আবাসস্থল রক্ষা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপর জোর দেওয়া হয়। সচেতন মূলক ক্যাম্প চলাকালে বৈরাগ ফকিরখিল বিল বৈদ্যুতিক ফাঁদ উদ্ধার করা হয়। এসব ফাঁদ দেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ।

সচেতনতা ক্যাম্পে বাঁশখালীর জলদির রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ, বনরক্ষক মো. ফোরকান মিয়াসহ ১৫০ জন এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্যরা জানান, হাতি রক্ষায় জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা এবং হাতি ও মানুষকে নিরাপদ রাখার জন্য করণীয় সম্পর্কে অবহিত করা। হাতি ও মানুষের মধ্যে সংঘর্ষের কারণ চিহ্নিত করা এবং তা নিরসনের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। হাতির প্রাকৃতিক খাবার ও চলাচলের পথ নিশ্চিত করা এবং বন সংকোচন রোধ করা। হাতি অপছন্দ করে এমন ফসল (যেমন: আদা, হলুদ, লেবু, মরিচ) চাষে কৃষকদের সহায়তা করা, যাতে তারা হাতির হাত থেকে ফসল রক্ষা করতে পারে। এছাড়াও বন্যপ্রাণীর হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা এবং হাতিকে বিরক্ত নাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতামূলক তুলে ধরা হয় ক্যাম্পে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. দিদারুল ইসলাম বলেন, বন বিভাগ ও এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমগুলো হাতির ক্ষতি থেকে গ্রামবাসীর ঘরবাড়ি রক্ষার চেষ্টা করছে, যা প্রশংসার যোগ্য। কর্মকর্তারা মাইকিং করে গ্রামবাসীকে সতর্ক করছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করতে বলছেন। কিন্তু এই ক্ষতিপূরণ কি কৃষক ও ক্ষতিগ্রস্তদের মনের শান্তি ফিরিয়ে দিতে পারে? তারপরও মানুষকে অনুরোধ করব হাতিকে বিরক্ত না করতে এবং হাতি মারার বৈদ্যুতিক ফাঁদ তৈরী না করতে। এসব ফাঁদে হাতি আটকাতে গিয়ে মানুষ নিজে আটকে ঘটছে বড় দুর্ঘটনা।

চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাছের মোহাম্মদ ইয়াছিন নেওয়াজ বলেছেন, ‘হাতির আক্রমণে এখন পর্যন্ত শুধু আনোয়ারা উপজেলায় ১ কোটি ৬০ লাখ ১৯ হাজার টাকা ক্ষতি পূরণ দেওয়া হয়েছে। হাতি আর মানুষ নিরাপদে থাকার জন্য বন সরকার কাজ করছে। হাতিকে বিরক্ত না করা এবং বৈদ্যুতিক ফাঁদ না দেওয়ার জন্য সকলের কাছে অনুরোধ করছি।’