ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীর নারী সমাবেশের মঞ্চ, বেশ কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ৩০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্ততপক্ষে ৫০ জন আহত ও একজন নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা) শহরে উভয় পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলছিল।
এ সময় ঘটনাস্থলে ছাত্রদলের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই ছাত্রদল নেতার নাম তানজিন আহমেদ মিঠু। তিনি ইকবাল হোসেনের সমর্থক ও জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি।
রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেলে গৌরীপুর পৌর শহরের পাটবাজার এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গৌরীপুর আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসেন। তার পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় জেলা উত্তর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন পাপ্পুর কার্যালয় ও দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরসহ স্থানীয় চার ব্যক্তিকে আহত করে মনোনয়নবঞ্চিত আহমেদ তায়েবুর রহমান হিরনের সমর্থকরা। এ ঘটনায় উত্তেজনা অব্যাহত ছিল। খবর পেয়ে যৌথ বাহিনী চারজনকে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করে।
যুবদল নেতা পাপ্পু জানান, আটকরা হিরণের সমর্থক। রাতে ভাঙচুর করেও থেমে থাকেনি তারা। আজও তারা অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করেছে।
এদিকে পূর্বনির্ধারিত সময়ে রোববার বিকেলে দুই পক্ষই পৌর শহরের আলাদা স্থানে সভার আয়োজন করে। মনোনয়নপ্রাপ্ত ইকবাল পক্ষ গৌরীপুর সরকারি কলেজের হোস্টেল মাঠে ও মনোনয়ন বঞ্চিত হিরণ পক্ষ শহরের মধ্যবাজার ধান মহাল এলাকা সভার আয়োজন করে। এদিন বিকেল চারটা থেকে দুই সমাবেশেই নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই পক্ষই নিজ নিজ স্থানে মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে একে অপরের ওপর হামলা, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।
ইকবাল পক্ষের নেতা হাবিবুল ইসলাম খান শহীদ জানান, শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে নারী সমাবেশে যাওয়ার পথে হিরণের সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালায়। এমনকি মনোনয়নপ্রাপ্ত ইকবালের গাড়িবহরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে।
হিরণ পক্ষের নেতা সুজিত কুমার দাস তাদের পক্ষের ৪০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন। তিনি জানান, ইকবালের উপস্থিতিতে পেছনে থাকা নেতা কর্মীরা অস্ত্র নিয়ে মিছিল থেকেই সমাবেশস্থলে প্রবেশ করে সমাবেশে আসা নারীদের ওপর হামলা চালায়। এতে হিরণের স্ত্রী সাঈদা মাশরুরসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হন। এ সময় মঞ্চ ভাঙচুর ছাড়াও নেতাকর্মীদের ৩০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) দেবাশীষ কর্মকার গণমাধ্যমকে জানান, দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অনেকেই আহতের খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।




Comments