দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (বাকসু) খসড়া গঠনতন্ত্র প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রকাশের পরপরই শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। খসড়া গঠনতন্ত্রকে ঘিরে চলছে নানান আলোচনা-সমালোচনা। সার্বিক বিষয় নিয়ে আগামী ৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীর্তনখোলা হলে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
তবে তার আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করছেন শিক্ষার্থীরা। কেউ বলছেন পদ-পদবীর যোজন-বিয়োজন নিয়ে, আবার কেউ প্রশ্ন তুলছেন কার্যপরিধির সীমাবদ্ধতা নিয়ে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর যখন বাকসু নির্বাচনের সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে, তখনই গঠনতন্ত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে। শিক্ষার্থীদের দাবি—প্রকাশিত খসড়া গঠনতন্ত্রে তাদের পূর্ণ মতামতের প্রতিফলন ঘটেনি।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও ববি শাখা ছাত্রদল নেতা আশিক আহমেদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে—এই সংসদটি কি সত্যিকারের ছাত্র সংসদ হবে, নাকি কেবল সামাজিক সংগঠন হিসেবে সীমাবদ্ধ থাকবে? এটি নির্ভর করছে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের ওপর। ভিসি স্যার ৫ নভেম্বর শিক্ষার্থী ও সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনার তারিখ নির্ধারণ করেছেন। আমরা সেই আলোচনার অপেক্ষায় আছি।’
লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রশিবির নেতা মোকাব্বেল শেখ বলেন, ‘প্রশাসন পাঁচ অধ্যায় ও ৩২ ধারার সমন্বয়ে গঠনতন্ত্র প্রকাশ করেছে। তবে তাতে শিক্ষার্থীদের মতামতের পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তব সংকট যেমন—ক্যাফেটেরিয়ার নিম্নমানের খাবার, পরিবহন সংকট, ক্লাসরুম ও আবাসন সংকট—এসব বিষয়ে আলাদা সম্পাদকীয় পদ থাকা প্রয়োজন ছিল।’
রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি প্রান্তে গঠনতন্ত্র ও আসন্ন নির্বাচনের আলোচনা চলছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছুটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। প্রকাশিত সংবিধিতে কিছু ফাঁকফোকর আছে, যা শিক্ষার্থীদের পূর্ণ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে না।’
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ও ববি গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ভূমিকা সরকার বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের অনেক প্রত্যাশা ছিল। যেমন আইনবিষয়ক সম্পাদক পদটি রাখা হয়নি। এছাড়া ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক বা ছাত্র কল্যাণ সম্পাদকও নেই, যা অন্য অনেক স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে। স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক পদটিও রাখা উচিত ছিল। আমাদের মেডিকেল সেন্টারের বর্তমান অবস্থায় নাপা ছাড়া অন্য কোনো ওষুধ পাওয়া যায় না। তাই এই পদটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’
গঠনতন্ত্র প্রকাশের মাধ্যমে বাকসু নির্বাচনের পথে এক ধাপ এগিয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। তবে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা—একটি অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচন, যেখানে প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে শিক্ষার্থীদের নানামুখী সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।




Comments