সৌদি আরব সরকার শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশের অংশ হিসেবে বিদ্যালয় পর্যায়ে সংগীত শিক্ষা চালু করতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে দেশটির শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে সংগীত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে হাজারো শিক্ষককে। বিশেষ করে, কিন্ডারগার্টেন ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নারী শিক্ষকদের।
সৌদি গণমাধ্যম জানিয়েছে, ২০২২ সালের শেষ দিকে দুই মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে মিউজিক কমিশন কর্তৃক পরিচালিত একটি কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। এর লক্ষ্য ছিল সংগীত শেখানোর দক্ষতা বাড়ানো এবং সংগীত শিক্ষক গড়ে তোলা। প্রথম ধাপে ১২ হাজারের বেশি নারী শিক্ষক সরকারি ও বেসরকারি কিন্ডারগার্টেনে প্রশিক্ষণ নেন।
এবার শুরু হয়েছে দ্বিতীয় ধাপ-যেখানে আরও ১৭ হাজার নারী শিক্ষককে সংগীত শিক্ষার পেশাগত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি মূলত একটি ‘সাংস্কৃতিক দক্ষতা উন্নয়ন কৌশলের’ অংশ, যার মাধ্যমে শিশুদের প্রাথমিক বয়স থেকে সংগীত ও শিল্পের সঙ্গে পরিচিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে সৌদি সরকার।
গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংগীত শেখানোর এই উদ্যোগ সৌদি শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যৌথ নীতি অনুসারে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর লক্ষ্য হলো-সংগীত ও অন্যান্য শিল্পকে ক্রমান্বয়ে বিদ্যালয়ের মূল পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সৌদি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় রিয়াদের কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম আর্টস কলেজ প্রতিষ্ঠা করে, যেখানে শিল্পকলার পাশাপাশি সংগীত বিষয়ে গবেষণা ও উদ্ভাবনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে সেখানে উচ্চশিক্ষার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে ২০২০ সালে সৌদি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘মিউজিক কমিশন’ গঠন করা হয়, যার কাজ হলো সংগীত খাতের বিকাশ তদারকি করা, সংগীত শিক্ষায় সমান সুযোগ নিশ্চিত করা, তরুণ প্রতিভাকে উৎসাহিত করা এবং সংগীতকে দেশের অর্থনীতির অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি আরব দ্রুত পরিবর্তনের পথে। দেশে এখন নিয়মিত আয়োজন করা হচ্ছে কনসার্ট, সিনেমা প্রদর্শনী, নাট্যোৎসব ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। শিল্প ও বিনোদনের এই উত্থান দেশের সামাজিক পরিবর্তনের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
নতুন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা মূলত কিন্ডারগার্টেন ও প্রাথমিক পর্যায়ের শিশুদের জন্য সংগীত শিক্ষা পরিচালনা করবেন। তাঁরা গান, তাল-লয়, বাদ্যযন্ত্রের মৌলিক ধারণা ও স্থানীয় লোকসংগীত শেখাবেন, যাতে শিশুরা ছোটবেলা থেকেই সংগীত ও শিল্পের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে।




Comments