Image description

বাউল শিল্পী আবুল সরকারকে গ্রেফতার এবং মানিকগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁওয়ে বাউলদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত ‘গানের আর্তনাদ’ কর্মসূচিতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

আয়োজক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, ‘জুলাই মঞ্চ’ নামের একটি সংগঠনের সদস্য এবং উসমান হাদীর নেতৃত্বে পরিচালিত ‘কনসার্ট ফর ঢাকা’র কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক সংঘবদ্ধভাবে এই হামলা চালায়।

বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সামি আবদুল্লাহ অভিযোগ করেন, ‘‘জুলাই মঞ্চ ও উসমান হাদীর ভোটের প্রচারের কনসার্ট থেকে কিছু লোক আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে হামলা চালায়। এটি সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত ছিল। তারা কর্মসূচির ব্যানার ভাঙচুর করে এবং অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে।’’

অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক মার্জিয়া প্রভা বলেন, ‘‘জুলাই মঞ্চের লোকজন ‘মব’ স্টাইলে হামলা করে। তারা এসেই মাইকে চিৎকার করে বাউল আবুল সরকারের নাম মুছে ফেলার দাবি জানায় এবং আমাদের ব্যাকড্রপ ভেঙে দেয়। তবে আমাদের বন্ধুরা শক্তভাবে এই মব প্রতিহত করেছে।’’ মিশকাত তানিশা নামের এক অংশগ্রহণকারী অভিযোগ করেন, হামলাকারীদের একজন তাকে জুতা দিয়ে মারার হুমকি দিয়েছেন।

ঘটনাস্থলে ‘ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাতকারীদের শাস্তি’ এবং ‘সাংস্কৃতিক চক্রান্ত প্রতিরোধ’র দাবিতে সমাবেশ করছিল জুলাই মঞ্চ। সংগঠনটির সদস্য মাসুম বিল্লাহ দাবি করেন, ‘‘আমরা তাদের বুঝিয়েছি ধর্ম নিয়ে কটূক্তিকারীদের (আবুল সরকার) পক্ষ নিয়ে যেন কোনো অনুষ্ঠান না করা হয়। কিন্তু তারা তা শোনেনি। উল্টো তারা মেয়েদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আমাদের ওপর চড়াও হয়েছে।’’

আয়োজকদের একাংশ মো. ওয়াসীর ও মো. শাহরিয়ার আলম জানান, তারা বাউলদের পক্ষে আন্দোলনের বিরোধী নন, তবে আবুল সরকারের নাম ব্যবহারের বিরোধিতা করেছিলেন।

হামলা ও হট্টগোলের মাঝেও ‘গানের আর্তনাদ’ কর্মসূচি বন্ধ হয়নি। আয়োজকরা জানান, বাধার মুখেই তারা তাদের কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন এবং সন্ধ্যায় মশাল মিছিলের মাধ্যমে সারা দেশে বাউলদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও আবুল সরকারের মুক্তির দাবি জানানো হবে।