আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপির মঞ্চে: আলোচনায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান

ফরিদপুরের সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ ওহিদুজ্জামান একসময় আওয়ামী লীগে যোগ দিলেও বর্তমানে আবার বিএনপি নেত্রী শামা ওবায়েদ ইসলামের মঞ্চে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
ওহিদুজ্জামান ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। ওই সময় তিনি ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
কিন্তু গত সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সালথা বাজার বাইপাস চৌরাস্তার মোড়ে উপজেলা জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের এক সভায় মঞ্চে বসে বক্তব্য রাখতে দেখা যায়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওহিদুজ্জামান বলেন, বিগত সরকার আমলে আলেম-উলামারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অনেকে কারারুদ্ধ হয়েছেন। তখন শামা আপা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আমি চাই আগামী নির্বাচনে তিনি দেশের সর্বোচ্চ ব্যবধানে বিজয়ী হোন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ওহিদুজ্জামান (৪৬) সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ইউসুদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা আব্দুল হাই মাস্টার। তিনি ২০১১ সালে ভাওয়াল ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান এবং ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
চেয়ারম্যান থাকাকালে তিনি সাজেদা চৌধুরী ও তার ছেলে আয়মন আকবরের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। এর সূত্রে ২০১৫ সালের ১৯ আগস্ট এক অনুষ্ঠানে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ওই অনুষ্ঠানের ব্যানারে লেখা ছিল, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের আওয়ামী লীগে যোগদান উপলক্ষে জনসভা।
এমনকি ২০১৯ সালে সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবেও ঘোষণা দেন এবং ব্যাপক প্রচারণা চালান। যদিও পরবর্তীতে সম্মেলন স্থগিত হয়ে যায়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাজেদা চৌধুরীর ঘনিষ্ঠতার কারণেই ওহিদুজ্জামানের প্রভাব বাড়ে। তার সমর্থকদের হাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন পর্যন্ত গণপিটুনির শিকার হয়েছিলেন।
এ বিষয়ে ওহিদুজ্জামান স্বীকার করে বলেন, আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলাম ঠিকই, তবে কখনো প্রকৃত অর্থে আওয়ামী লীগার হতে পারিনি। আবার ২০১১ সালে ভাওয়াল ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকও ছিলাম, তবে কাগজে কলমেই।
তিনি আরও জানান, ২০০৯ সালে একটি হত্যা মামলায় কারারুদ্ধ হলে শামা ওবায়েদ তাকে সহায়তা করেছিলেন। ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তার বিজয়ও শামা ওবায়েদের সমর্থনের কারণেই সম্ভব হয়েছিল। নিজ অবস্থান পরিষ্কার করে ওহিদুজ্জামান বলেন, আমি আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কোনোটিই করি না, নেতাও হতে চাই না। আমি শুধু শামা আপার সাথে আছি।
Comments