Image description

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা উপজেলায় এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টের দক্ষিণ পাশে গন্ডামারা সমিতি ঘোনার সাথে লাগানো পশ্চিম পাশে বঙ্গোপসাগরের কূলঘেঁষে সমুদ্রের চর দখল করার হিড়িক চলছে। স্থানীয় একটি রাজনৈতিক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টে পক্ষে চায়না কোম্পানীর নাম ব্যবহার করে বেশ কয়েকদিন যাবৎ সমুদ্রের চর দখল করে ৫-৬ টি স্কেভেটর দিয়ে মাঠি কেটে মৎস প্রজেক্ট করার হিড়িক চলছে। 

খবর পেয়ে বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ওমর সানী আকনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হলেও দুষ্কৃতকারীরা স্কেভেটর ফেলে পালিয়ে যায়। এসময় এস এস পাওয়ার প্লান্ট কর্তৃপক্ষকে স্কেভেটরগুলো ব্যবহার থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা প্রদান করা হলেও তিনি চলে আসার পর থেকে পুনরায় কাজ চলমান রয়েছে। 

এ দিকে সরেজমিনে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে চলমান স্কেভেটর থেকে তারা ছিটকে পড়ে কিছু দূর উত্তর পাশে ঝাউগাছের ভিতরে লুকিয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর সংবাদকর্মীরা ওই সাগর পাড় থেকে কূলে উঠে আসার সাথে সাথে পুনরায় তারা বের হয়ে কাজ করতে দেখা যায়। 

নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক স্থানীয় বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী ও সমিতি ঘোনার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এস আলম কয়লা বিদ্যুতের বিভিন্ন চাইনিজ কোম্পানীর নাম ভাঙ্গিয়ে সাগরের চর গুলো দখল করছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। তারা সমিতি ঘোনার দায়িত্বরত কয়েকজনকে এই কাজের অংশীদার রেখেছেন বলে ও জানান। তবে স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত কোকন এই কাজ গুলো দেখবাল করছেন বলে ও তারা জানান। 

এ বিষয়ে মুঠোফোনে কোকন জানান, কাজটি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়নিজরা স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ড্রেজিং এর বালু  উত্তোলন করার জন্য সমিতি ঘোনা থেকে জায়গা গুলো নিয়ে কাজ করছেন।

অপর দিকে সমিতি ঘোনার সভাপতি আবু আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক আমির হোসাইন জানান, শুনতেছি কয়লা বিদ্যুৎতের বালু উত্তোলন করার জন্য মাটি কেটে বাঁধ তৈরি করা হচ্ছে। এখানে মাটি ও বালু উত্তোলনের বিষয়ে সমিতি ঘোনার কোন সম্পৃক্ততা নাই। 

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা লেয়াকত আলীর সাথে মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ও তার মোবাইল ফোন টি বন্ধ পাওয়া যায়। 

তবে অন্য দিকে এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টের সাইট প্রজেক্ট ম্যানেজার ফয়জুর রহমান বালু উত্তোলনের বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমিকে ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির নিমিত্তে মাটি উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করেন।

নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টে কর্মরত কয়েকজন কর্মকর্তা ইতিপূর্বে এসব কাজের সাথে এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টের কোন সম্পৃক্ততা নাই বলে ও জানিয়েছিলেন। তবে কি অদৃশ্য  কারণে সাইট প্রজেক্ট ম্যানেজার এই বিষয় টি প্রজেক্ট এর দাবী করলেন আমাদের জানা নাই।  

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ওমর সানী আকন বলেন, অভিযান পরিচালনাকালে ঘটনাস্থলে ২০-২৫ টি ঝাউগাছ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দেখা যায়। ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির নিমিত্তে মাটি ও বালু উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের সাইট প্রজেক্ট ম্যানাজার। তাকে সাগর চর থেকে মাটি ও বালু উত্তোলন কাজের আইনগত বৈধতা না থাকায় উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে। পরিবেশ বিপর্যয় এর বিষয় সুরাহা না করে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে অননুমোদিতভাবে মাটি না কাটার জন্য নির্দেশন প্রদান করা হয়েছে। এই আদেশ অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। 

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, বঙ্গোপসাগরে চর থেকে অবৈধ ভাবে মাটি ও বালু উত্তোলনের সাথে যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের কে আইনের আওতায় আনা হবে।