দুবাইপ্রবাসী এ আর হোসেন ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি ফেরার পথে বাসে অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়েন। পাশের আসনের যাত্রী তাঁকে জুস খাওয়ার নামে অজ্ঞান করে টাকা, মুঠোফোন ও স্বর্ণালংকার লুট করেন। তবে লাগেজ নিতে গিয়ে ধরা পড়েন অভিযুক্ত আরমান হোসেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে নওগাঁগামী একতা পরিবহনের বাসে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করেছে।

ভুক্তভোগী এ আর হোসেনের বাড়ি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার কুন্দগ্রামে। তিনি দুবাই থেকে গতকাল সকালে ঢাকায় পৌঁছান। বেলা ১১টার দিকে গ্রামের বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে উত্তরা থেকে একতা পরিবহনের বাসে ওঠেন। বাসে তাঁর পাশের আসনে বসা আরমান হোসেন নামে এক যাত্রীর সঙ্গে আলাপ শুরু হয়। আরমান নরসিংদী জেলার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বাসের স্টাফদের বরাতে জানা যায়, বগুড়ার শেরপুরের কাছাকাছি পৌঁছালে আরমান একটি বোতল থেকে জুস বের করে এ আর হোসেনকে খাওয়ার প্রস্তাব দেন। সরল মনে কোনো সন্দেহ না করে হোসেন জুস পান করেন। এরপর তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এ সুযোগে আরমান তাঁর মানিবাগ, মুঠোফোন ও স্বর্ণালংকার চুরি করেন।

এ আর হোসেন জানান, তাঁর নামার কথা ছিল বগুড়া-নওগাঁ সড়কের চৌমুহনী মোড়ে। কিন্তু অজ্ঞান থাকায় বাস নওগাঁ বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে যায়। সেখানে বাসের সুপারভাইজার ও পাশের যাত্রী তাঁকে নামিয়ে মুখে-চোখে পানি দিলে চেতনা ফেরে। চেতনা ফিরতেই তিনি পাশের আসনের আরমানকে সন্দেহ করেন এবং তাঁকে ধরে ফেলেন। অন্য যাত্রীদের সহযোগিতায় তাঁর কাছ থেকে চুরি হওয়া টাকা, মুঠোফোন ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।

হোসেন আরও জানান, আরমানের উদ্দেশ্য ছিল বাসের লকারে থাকা তাঁর লাগেজ নেওয়া, যেখানে আরও কিছু মূল্যবান জিনিস ছিল। তবে লাগেজ নেওয়ার আগেই তিনি ধরা পড়েন।

নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, অজ্ঞান পার্টির সদস্য সন্দেহে আরমান হোসেন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এ ঘটনা বাসযাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। দূরপাল্লার বাসে অজ্ঞান পার্টির সক্রিয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা অপরিচিত ব্যক্তির দেওয়া খাবার বা পানীয় গ্রহণে সতর্কতার পরামর্শ দিয়েছেন।