কলাপাড়ায় ডেঙ্গুতে দুই নারীর মৃত্যু, অর্ধশতাধিক আক্রান্ত

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুরে ডেঙ্গুতে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন, দুই দিন আগে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে। আরও অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রয়েছেন।
সূত্র জানায়, লতাচাপলী ইউনিয়নের সুমাইয়া (২৫) নামের এক নারী রোববার রাতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মৃত্যুর দুই দিন আগে তিনি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সন্তান বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। এছাড়া নজিবপুর গ্রামের সাফিয়া বেগম (৩০) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সুমাইয়ার স্বজন জানান, সুমাইয়া গর্ভবতী অবস্থায় হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হন। প্রথমে পরিবারের সদস্যরা সাধারণ জ্বর মনে করেন, পরে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই অবস্থা ক্রমশ খারাপ হয় এবং ডাক্তার সিজারিয়ান করেন।
এলাকার বাসিন্দা মিজান হাওলাদার বলেন, তুলাতুলি ২০ শয্যা হাসপাতাল কার্যত অচল, কোনো এমবিবিএস ডাক্তার নেই। এলাকায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে, কিন্তু চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। স্থানীয়রা দ্রুত হাসপাতাল চালু করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, মহিপুরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। জনসচেতনতার জন্য মাইকিং ও ঘরে ঘরে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। হাসপাতালের একজন এমবিবিএস ডাক্তার পদায়নের প্রক্রিয়া চলছে এবং তিনি দুই/এক দিনের মধ্যে যোগ দেবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কাউছার হামিদ বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। মশার লার্ভা ধ্বংসে ফগার মেশিন দিয়ে স্প্রে কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পরিচালনা করা হবে। তুলাতুলি হাসপাতালে ডাক্তার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এদিকে মহিপুর ও আশপাশের এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশালের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারে।
Comments