শিক্ষক আন্দোলনে লাঠিচার্জের প্রতিবাদে রাজৈরে দ্বিতীয় দিনেও ক্লাস বন্ধ

ঢাকায় শিক্ষক আন্দোলনে পুলিশের লাঠিচার্জ ও জলকামান নিক্ষেপের ঘটনায় মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় দ্বিতীয় দিনেও (মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর) সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। উপজেলা জুড়ে শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে না গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন, শিক্ষার্থীরা এলেও ক্লাস হচ্ছে না।
সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি মঙ্গলবারও অব্যাহত থাকে। রাজৈর সদর ও বিভিন্ন ইউনিয়নের বিদ্যালয়ে দেখা গেছে—শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে এলেও শিক্ষকরা অফিসকক্ষে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনরত সহকর্মীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছেন।
রাজৈর উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুব সিকদার বলেন, শিক্ষকদের ওপর লাঠিচার্জ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর আঘাত। আমরা কোনো রাজনৈতিক কারণে নয়, ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলনে একসঙ্গে আছি। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।
শিক্ষকরা জানান, জাতীয় বেতন স্কেলে বৈষম্য দূরীকরণ, পদোন্নতি কাঠামো সংস্কার এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে তারা এই কর্মসূচি পালন করছেন।
অন্যদিকে, হঠাৎ পাঠদান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। সকালে বিদ্যালয়ে এসে ক্লাস না পেয়ে অনেকে বাড়ি ফিরে যায়। অভিভাবকরা বলছেন, আন্দোলনের যৌক্তিকতা থাকলেও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা যেন দীর্ঘ সময়ের জন্য ব্যাহত না হয়, সে বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুল হক বলেন, ঢাকায় ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রতিবাদে রাজৈরের বেসরকারি শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে আছেন। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি, যেন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজৈর পাইলট বালিকা বিদ্যালয়, মেহেরআলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আলম দস্তার মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থাকলেও শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে যাননি। এদিকে রাজৈর পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও মাঠে নেমে শিক্ষকদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়েছে এবং শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি দ্রুত মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে রাজধানীতে মাধ্যমিক শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশের জলকামান ও লাঠিচার্জে একাধিক শিক্ষক আহত হন। এর প্রতিবাদেই রাজৈরসহ সারাদেশে শিক্ষক সমাজের এই কর্মবিরতি ছড়িয়ে পড়েছে।
Comments