খাগড়াছড়ির মানিকছড়ির ঐতিহ্যবাহী মং রাজবাড়ী রাজ জেতবন বৌদ্ধ বিহারে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব 'দানোত্তম কঠিন চীবর দান'।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে রাজ জেতবন বৌদ্ধ বিহারে বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামনায় পঞ্চশীল গ্রহণের মধ্য দিয়ে দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের উদ্দেশে বুদ্ধ মূর্তি দান, সংঘ দান, অষ্ট পরিষ্কার দান, কল্পতরু দান ও পিণ্ডু দান সহ নানা ধর্মীয় দান ও সদ্ধর্ম শ্রবণ করেন বৌদ্ধ দায়ক-দায়িকারা।
এসময় বৌদ্ধ ধর্মালম্বী দায়ক-দায়িকাদের উদ্দেশে পঞ্চশীল ধর্মদেশনা প্রদান করেন রাজ জেতবন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ক্ষেমাসারা মহাথের। ধর্মদেশনা দেন গুইমারা দেওয়ান পাড়া বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত সাঘড়া মহাথের।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মংরাজা মংপ্রুসাইন বাহাদুর ফাউন্ডেশন চেয়ারম্যান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য কুমার সুইচিংপ্রু সাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছোট কুমার নিংপ্রু সাইন, মারমা ঐক্য পরিষদ মানিকছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি আপ্রুসি মগ, সাধারণ সম্পাদক আম্যে মগ, রাজপাড়া কার্বারী চাইহ্লাপ্রু মারমা প্রমুখ।
বৌদ্ধ শাস্ত্র মতে, গৌতম বুদ্ধের অনুগামী মহা উপাসিকা বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত এই রীতি অনুযায়ী, চীবর তৈরির প্রক্রিয়া যেমন শ্রমসাধ্য ও কষ্টকর, তেমনি তা ভিক্ষু সংঘকে দান করা সবচেয়ে উত্তম ও পুণ্যময় দান হিসেবে বিবেচিত।
এ উপলক্ষে রাজ জেতবন বৌদ্ধ বিহার এবং গচ্ছাবিল ধর্মচক্র রক্ষিতা বৌদ্ধ বিহারে চীবর দান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে নারী-পুরুষ, ভিক্ষু, উপাসক-উপাসিকারা অংশ নেন এই ঐতিহ্যবাহী দানোত্তম অনুষ্ঠানে। বিকেলে রাজ জেতবন বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণে হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয় এবং আকাশে ফানুস বাতি উত্তোলন করা হয়।
Comments