
কুষ্টিয়ায় নিজ কোচিং সেন্টারের লিফলেট বিতরণ করার সময় ছাত্রদল নেতাকর্মীদের বেধড়ক পিটুনিতে গুরুতর আহত হয়েছেন আশিকুর রহমান নামের এক যুবক। তাঁর মাথায় ১৬টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। তিনি স্থানীয় ইকোনমিকস হাব নামের একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষক। রোববার দুপুরে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে আশিকুর কলেজ ক্যাম্পাসে তাঁর কোচিং সেন্টারের লিফলেট বিতরণ করছিলেন। এ সময় কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাঁকে ক্যাম্পাসে লিফলেট বিতরণ করতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে নেতাকর্মীরা আশিকুরের ওপর হামলা চালায়। হামলায় নেতৃত্ব দেন কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শিমুল হোসেনের অনুসারী রাফি। হামলাকারীরা ইট ও লাঠি দিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে। দৌড়ে পালিয়ে তিনি একটি রিকশায় উঠলে সেখানে তাঁকে আরেক দফা পেটানো হয়। খবর পেয়ে আশিকুরের সহকর্মীরা এসে তাঁকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসক তাঁর মাথায় ১৬টি সেলাই দেন।
আহত আশিকুর রহমান বলেন, কলেজে আমাদের কোচিং সেন্টারের লিফলেট বিতরণ করতে গিয়েছিলাম। এ সময় ছাত্রদলের ছেলেরা আমাকে লিফলেট বিতরণ করতে বাধা দেয় এবং দুর্ব্যবহার করে। আমি তাদের ভদ্রভাবে কথা বলার অনুরোধ করার সঙ্গে সঙ্গে তারা আমাকে মারধর করা শুরু করে। নিরাপত্তার কারণে হাসপাতাল থেকে বাসায় এসে চিকিৎসা নিচ্ছি। হামলাকারীদের মধ্যে তিনি শুধু রাফিকে চেনেন বলেও জানান।
ছাত্রদল নেতা শিমুল হোসেন দাবি করেন, কলেজের পোশাক পরা কয়েকজন ছেলে আশিকুরকে ঘিরে ধরে মারধর করছিল। আমি গিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করি। একপর্যায়ে আমি নিজে মাটিতে পড়ে গেলে মান-সম্মানের কারণে চলে আসি। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কলেজ প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি। আর রাফি ছাত্রলীগ করত। এ কারণে প্রথমদিকে আমার সঙ্গে থাকলেও এখন তাকে এড়িয়ে চলি।
কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোজাক্কির হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজখবর নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন, ঘটনা শুনেছি। হামলার শিকার আশিকুর রহমান এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, মাসখানেক আগে জেলার এক সমন্বয়ককে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রাফি ও তার দলবল। কলেজে কিশোর গ্যাংয়ের বড় একটি গ্রুপ রাফির নিয়ন্ত্রণে। তার বাইরে গেলেই মারধরসহ নানা ধরনের নির্যাতন চালানো হয়।
Comments