পটুয়াখালীর বাউফল পাবলিক মাঠে প্রেসক্লাবের আয়োজনে শিল্প ও সংস্কৃতিকে রক্ষায় আয়োজিত মিনি বাণিজ্য মেলাকে ঘিরে একটি পক্ষ বানচালের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মেলাটিতে দেশি পণ্য শিল্প ও স্থানীয় শিল্পীদের তৈরি বিভিন্ন প্রকার মালামাল, মাটির ক্রোকারিজসহ নানা পণ্যের বাহার; কামার, কুমার, কুটির শিল্পের মাধ্যমে শিশুদের বিনোদন—নাগর দোলা, ভুতের বাড়ি, সাম্পানওয়ালা, হানি চিং, চরকি, স্লিপার, পানির হাউজ, বাচ্চাদের বিভিন্ন প্রকারের খেলনা রয়েছে। বাউফল প্রেসক্লাব সরকারের নিয়মকে মেনে এ মেলার আয়োজন করে। গুটি কয়েক ব্যক্তির এ বাণিজ্য মেলা বন্ধ করার জন্য উঠে পড়ে লাগায় বাউফলের কুটির শিল্প, মাটির শিল্পসহ সামাজিক সাংস্কৃতিক মহলে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
বাউফল প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. জলিলুর রহমান বলেন, প্রশাসন বরাবরে আবেদন করে সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অ্যাকাউন্টে ভ্যাট, ট্যাক্সসহ টাকা জমা দিয়ে সকল নিয়ম মেনে এ আবেদন করা হয়। কিন্তু সরকারের প্রশাসনকে বিপথগামী করে রাখা গুটি কয়েক জনের একটি মহল নানাভাবে প্রভাবিত করে মিথ্যা ও গুজবের আশ্রয় নেয়, যা জনস্বার্থ পরিপন্থী। মেলা আয়োজকরা প্যান্ডেলসহ গ্রামীণ ঐতিহ্যের বাহারে সহস্রাধিক দোকানি মাঠে দোকান রেখেছেন, যা গ্রামীণ ঐতিহ্যের বিকাশ। মেলা বন্ধের ব্যাপারে বাউফলের বিভিন্ন মহলে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক, আব্দুল জব্বার মৃধা ও পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহজাহান হাওলাদার বলেন, সমাজের নৈতিক দায়িত্ব এসব সংস্কৃতিকে ধরে রাখা। তা না হলে বিলুপ্ত হবে এসব শিল্প।
উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মো. ইছাহাক বলেন, প্রেসক্লাবের সভাপতি জলিলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো. জসীম উদ্দিন সহ সকলে অবহিত করেছেন, তাদের ভাষ্য সমাজ ও শিক্ষার্থীদের কোনো স্বার্থ অরক্ষিত হবে এমন কোনো কাজ এ মেলায় হবে না। তিনি আরও বলেন, তবে যেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মেনেই বাণিজ্য মেলা হয়। একই ভাষ্য ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের।
এ বিষয়ে শিল্পী অমল বণিক বলেন, সংস্কৃতি ও কুটির শিল্পদের এখন দুর্দিন, তাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন গ্রামীণ বাণিজ্য মেলা, যা সমাজকে অপরাধ থেকে মুক্ত রাখে।
মৃৎশিল্পী বরুন পাল বলেন, তামা, কাঁসা, পিতল শেষ করেছে স্টিল। আর এখন মাটির পণ্যের প্রচলন না থাকায় আমরা সমাজ থেকে হারিয়ে যাচ্ছি। নানা কারণে এখন গ্রামীণ মেলা নেই। আমাদের পৃষ্ঠপোষকতা করবে সরকার। মেলা বন্ধ হলে শত শত মানুষ এ পেশায় জড়িত, তাদের কর্মের চাকা বিকল হলে অভাব দেখা দেবে।
এ বিষয়ে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা সকল রাজনৈতিক, সামাজিক ও ইমাম কমিটিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠক করেছি। সেই বৈঠকে বাণিজ্য মেলা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে এবং তাদের সম্মতিতে আয়োজন হলেও একটি মহল গুটি কয়েকজনকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। আমরা সরকারের নিয়ম মেনেই আয়োজন করছি। এতে শিক্ষার কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ আমার সন্তান আছে। সেও পড়াশুনা করে।
Comments