সাবেক সেনার বাড়িতে রাতভর ডাকাতি, পরিবারকে তালাবদ্ধ করে ৫৪ লাখ লুট
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় অস্ত্রের মুখে একটি পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকাসহ প্রায় ৫৪ লাখ টাকার মালামাল লুট করেছে বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। রোববার দিনগত রাতে গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি দক্ষিণপাড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হকের বাড়িতে এই ডাকাতি হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ফজলুল হকের মেয়ে সাথী বেগম জানান, "রাত ১টার দিকে একটি শব্দ শুনে আমার ঘুম ভেঙে যায়। তবে তখন বিষয়টি গুরুত্ব দেইনি। পরে রাত ৩টার দিকে তাহাজ্জুদ পড়তে উঠে দেখি জানালার গ্রিল কেটে দুই যুবক ঘরে ঢুকে পড়ে। তারা প্রথমে আমাকে, পরে আমার ছেলে সাবিদকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। এরপর একে একে আমাদের বিল্ডিংয়ের চারটি ফ্ল্যাটে লুটপাট চালায়। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলে এই ডাকাতি।"
সাথী বেগম আরও বলেন, "ডাকাতরা নগদ প্রায় ৩ লাখ টাকা, ৩২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ৯টি মোবাইল সেট লুট করে নেয়। যাওয়ার আগে আমাদের সবাইকে একটি রুমে আটকে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে যায়।"
অন্য প্রত্যক্ষদর্শী সাবিদ জানান, "প্রথমে দুজন জানালার গ্রিল কেটে ঢোকে, পরে আরও ২২-২৩ জন ভিতরে প্রবেশ করে। বাইরে আরও কয়েকজন পাহারায় ছিল। তাদের অধিকাংশের মুখে মাস্ক ও গামছা ছিল। আমাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তারা অন্যান্য ফ্ল্যাটের দরজা খোলায়। আমার চোখের সামনে একের পর এক রুমে ডাকাতি চালায় তারা।"
অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হক বলেন, "আমার তিন ছেলে দেশের বাইরে থাকে। তাদের পাঠানো প্রায় ৩২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ব্যাংক থেকে তোলা ৩ লাখ টাকা এবং ৯টি মোবাইল লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতরা। তারা আমাদের পরিবার সম্পর্কে বিস্তারিত জানত— কোন রুমে কী আছে, আমরা কবে টাকা তুলেছি, এমনকি বাসার ওয়াইফাই বন্ধ আছে তাও জানত। আমার ধারণা, স্থানীয় কেউ এতে জড়িত। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দেব।"
ভুক্তভোগীর প্রতিবেশী লাক মিয়া বলেন, "ভোর ৫টার দিকে আমরা বিষয়টি বুঝতে পারি। পরে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ রুম খুলে তাদের উদ্ধার করি। তখনই খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ডাকাতরা নির্বিঘ্নে চলে যায়।"
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, "সকাল ৬টার দিকে ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে আমরা ঘটনাটি জানতে পারি। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।"




Comments