চিলমারীতে দুপুরে ছুটি, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মাদ্রাসা পরিচালনা!
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে অবস্থিত রাজারভিটা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা ও রাজারভিটা ইসলামিয়া মহিলা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ মতে, তারা সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজেদের খেয়ালখুশিমতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন, যেখানে দুপুরেই মাদ্রাসা ছুটি দিয়ে চলে যান শিক্ষকরা।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) পৌনে ২টায় সরেজমিনে মাদ্রাসা দুটি বন্ধ অবস্থায় দেখা যায়। এমনকি জাতীয় পতাকাও ছিল না এবং অফিস ও শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলছিল।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, "প্রতিদিন দুপুর হলেই মাদ্রাসা ছুটি দেওয়া হয়। এরপর দেড়টা-দু'টার দিকে মাদ্রাসায় তালা ঝুলিয়ে অধ্যক্ষসহ শিক্ষক-কর্মচারীরা চলে যান।" তারা আরও জানান যে, শিক্ষক-কর্মচারীদের এমন উদাসীন কার্যকলাপে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খুবই কম এবং সঠিকভাবে পাঠদানও হয় না।
এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আশাদুল ইসলাম জানান, প্রায় প্রতিদিনই ১২টা থেকে ১টার মধ্যে মাদ্রাসা দুটি বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে শিক্ষার্থী উপস্থিতি ও শিক্ষার মান উদ্বেগজনক হারে কমে গেছে।
মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজারভিটা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ফাজিল শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৮২১ জন শিক্ষার্থী এবং ৩৬ জন শিক্ষক ও কর্মচারী রয়েছেন। রাজারভিটা ইসলামিয়া মহিলা আলিম মাদ্রাসায় ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে আলিম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৩০০ জন শিক্ষার্থী এবং ২৪ জন শিক্ষক ও কর্মচারী রয়েছেন। তবে রাজারভিটা ইসলামিয়া মহিলা আলিম মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক আব্দুল গাফ্ফার নামে একজন শিক্ষককে একটি শ্রেণিকক্ষে দশম শ্রেণির ৩ জন শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতে দেখা গেছে।
প্রাইভেট পড়তে আসা শিক্ষার্থী আতিকা মনি, মানছুরা ইয়াসমীন মাফিয়া ও নাজমিন নাহার জানান, মাদ্রাসা ছুটি হয়েছে, এখন প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি যাবেন।
জানতে চাইলে প্রভাষক আব্দুল গাফ্ফার বলেন, দুপুর দেড়টায় মাদ্রাসা বন্ধ দেওয়ায় তিনি প্রাইভেট পড়াচ্ছেন।
রাজারভিটা ইসলামিয়া মহিলা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম রাজু বলেন, তিনি অসুস্থতাজনিত কারণে বাসায় চলে এসেছেন এবং বাকি শিক্ষকগণ কেন এত তাড়াতাড়ি চলে গেছেন তা তার জানা নেই। রাজারভিটা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মো. মিনহাজুল ইসলাম বলেন, তিনি অফিসের জরুরি কাজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দায়িত্ব দিয়ে বাইরে এসেছেন এবং মাদ্রাসা ছুটির বিষয়টি তার জানা নেই।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, "বিকেল ৪টার আগে মাদ্রাসা বন্ধ রাখার সুযোগ নেই। তদন্ত সাপেক্ষে মাদ্রাসা দুটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"




Comments