Image description

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নে এখন সাফল্যের সুবাতাস ছড়িয়ে দিয়েছে লতিরাজ কচু। উন্নতমানের এই কচু চাষ করে এলাকার কৃষকদের মাঝে আশার আলো জাগিয়েছেন চাঁনপুর গ্রামের তরুণ কৃষক কামাল হোসেন।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কন্দাল ফসল চাষে আগ্রহী কামাল হোসেন যশোর থেকে বারি-১ জাতের ৩০ হাজার চারা সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে এনে তার নিজস্ব ৬ বিঘা জমিতে লতিরাজ কচু চাষ করেছেন। মাত্র দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যেই লতার উৎপাদন শুরু হয়েছে, যা স্থানীয় বাজারে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে তিনি সপ্তাহে ১২ থেকে ১৫ মণ লতি বিক্রি করছেন। কৃষক কামালের চোখে এখন সাফল্যের স্বপ্ন। তার ক্ষেতের সবুজ লতাপাতায় সাফল্যের এই গল্প কেবল একজন কৃষকের স্বপ্ন নয়, বরং এটি শত কৃষকের পথ দেখানোর এক অনন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে। সঠিক পরিচর্যা ও তার কঠোর পরিশ্রমের ফসল হয়ে উঠেছে লতিরাজ কচু, যার সুবাতাস ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিটি কৃষকের মাঝে।

একই এলাকার ধান চাষি আব্দুস সালাম বলেন, ‘কামাল ভাইয়ের লতিরাজ কচু ক্ষেত দেখে এলাম। ফলন দেখে আমি অভিভূত, তাই আগামী মৌসুমে আমিও লতিরাজ কচু চাষ করব।’

কৃষক কামাল হোসেন বলেন, ‘আগে আমি এই জমিতে আমন ধান এবং পরে বাদাম চাষ করতাম। বন্ধুর পরামর্শে ৬ বিঘা জমিতে এখন লতিরাজ কচু চাষ করছি। কচুর চারা, সার ও শ্রমিক খরচ বাবদ প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৫ মণ লতা বিক্রি হয়েছে। আশা করি আগামী বর্ষা আসার আগ পর্যন্ত ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার লতা বিক্রি করতে পারব। লতা বিক্রি শেষ হলে মেডিসিন দিয়ে মোড়া কচুও বিক্রি করা যাবে, এতে করে আরও দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।" 

তিনি আরও জানান, প্রতিদিন বিভিন্ন কৃষক তার ক্ষেত দেখতে আসে এবং অনেকেই আগামীতে লতি কচু চাষ করতে উৎসাহিত হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার সাহা জানান, কচু জাতীয় ফসল একটি অর্থকরী ফসল। প্রতি বিঘা জমিতে লক্ষাধিক টাকা আয় সম্ভব। লতিরাজ কচু কেবল আর্থিকভাবে লাভজনক নয়, এটি আয়রন সমৃদ্ধ সবজি, যা গর্ভবতী মা এবং শিশুদের পুষ্টি নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখে। এই উপজেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় মুখী কচু, লতিরাজ কচু, পানি কচু চাষের সম্প্রসারণ হচ্ছে। এবার এই উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে কন্দাল ফসল উৎপাদন হবে। লতিরাজ কচু চাষ লাভজনক হওয়ায় দিন দিন কৃষকের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে।