মাদারীপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীকে মারধর করার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনের আশ্বাসে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে দুই ঘণ্টা পর সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে মাদারীপুর-শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কের যান চলাচল। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী, পথচারী ও এলাকাবাসী।
জানা যায়, গত ৩০ নভেম্বর বিকেলে কয়েকজন বখাটে মাদারীপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতর প্রবেশ করে মাদক সেবন করছিল। এরই প্রতিবাদ করেন রসায়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইকবাল আমিন ওরফে সম্রাট (২০)-সহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সময় মাদকসেবীদের সাথে কলেজের শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা হয়। এই ঘটনার জেরে বুধবার বিকেলে কলেজ মাঠে সম্রাটকে একা পেয়ে মারধর করে বখাটেরা। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন তার সহপাঠীরা।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ এবং সীমানা নির্ধারণ করে পকেট গেট বন্ধসহ তিন দফা দাবিতে বুধবার রাতেই মাদারীপুর-শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কের দুপাশে অবরোধ করে স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। দ্বিতীয় দিনের মতো বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ফের শুরু হয় আন্দোলন। মাদারীপুর সরকারি কলেজ গেটের সামনে আবারো সড়ক অবরোধ করা হয়। সহস্রাধিক শিক্ষার্থী এই আন্দোলনে অংশ নেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন কলেজের অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান এবং সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল হোসেনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ‘২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে যদি দাবি মেনে নেওয়া না হয়, তাহলে আবারো আন্দোলন শুরু হবে। কলেজ ক্যাম্পাসে কোনো মাদক সেবন চলবে না। বহিরাগতদের প্রবেশ স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে, যাতে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ সঠিকভাবে বজায় থাকে।’
মাদারীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। তাদের এই দাবি মেনে নেওয়া হলে কলেজে বহিরাগতদের আড্ডা কমে যাবে। প্রশাসন থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তাই শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিয়েছে।’
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল হোসেন বলেন, ‘কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় দোষীদের ধরতে এরই মধ্যে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। এছাড়া কলেজের ভেতর পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’




Comments