কলাপাড়া মুক্ত দিবস: মুক্তিযোদ্ধার বীরত্বগাঁথা স্মরণে নেই কোনো উদ্যোগ
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস ছিল ৬ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কলাপাড়াকে শত্রুমুক্ত করেছিলেন। তবে গৌরবের এই দিনটি উদযাপনে এবার দেখা মেলেনি কোনো আনুষ্ঠানিকতা।
দিবসটি উপলক্ষে এবার বের করা হয়নি কোনো শোভাযাত্রা, অনুষ্ঠিত হয়নি কোনো আলোচনা সভাও। ফলে নীরবেই পার হয়ে গেল কলাপাড়া মুক্ত দিবস।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর বিকেলে পার্শ্ববর্তী গলাচিপা থেকে ‘ভাট্রি’ নামের একটি জাহাজে করে মুক্তিযোদ্ধারা কলাপাড়ায় পৌঁছান। পরদিন ৫ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে পাক-হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ শুরু করেন তারা। প্রবল আক্রমণের মুখে পাক বাহিনীর সদস্যরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
ওই রাতে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাবিবুল্লাহ রানার নেতৃত্বে ৫৩ জন মুক্তিযোদ্ধা সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন। রাত ৩টার দিকে তারা কলাপাড়া থানা ভবন আক্রমণ করেন। টানা ৭ ঘণ্টা ত্রিমুখী আক্রমণের পর হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এ যুদ্ধে আরিফুর রহমান মুকুল নামের এক মুক্তিযোদ্ধা এবং দুই রাজাকার আহত হন।
পরদিন ৬ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযোদ্ধারা কলাপাড়া থানা ভবন পুরোপুরি দখল করে সেখানে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর থানার সম্মুখে ৫ জন পাক হানাদার এবং ২৭ জন রাজাকারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এভাবেই শত্রুমুক্ত হয় কলাপাড়া।
দিবসটি নিয়ে এবার কোনো আয়োজন না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুল্লাহ রানা বলেন, ‘আজকের এই দিনে (৬ ডিসেম্বর) আমরা কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা জীবন বাজি রেখে কলাপাড়াকে রাজাকার ও হানাদার মুক্ত করেছিলাম। দিনটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের।’




Comments