Image description

শরীয়তপুরে বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে এক নারী (গৃহবধূ) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা শহরের বন বিভাগের একটি বাগানের ভেতরে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে পালং মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মারুফ হাওলাদার (১৮), নাফিজ বেপারী (২২), সাইফুল খান (২২) ও সিফাদ ভূইয়া (২০)। মামলায় এজাহারনামীয় একজনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার দুপুরে ওই নারী তার এক বন্ধুর সঙ্গে মাদারীপুর লেকপাড়ে ঘুরতে যান। সেখান থেকে শরীয়তপুরে ফিরে খাওয়া-দাওয়ার পর শহরের দিকে রওনা হলে সন্ধ্যা ৬টার দিকে দুই যুবক তাদের পথরোধ করে। একপর্যায়ে ওই নারীর বন্ধুকে মারধর করে অচেতন করে ফেলা হয় এবং নারীকে জোরপূর্বক বন বিভাগের বাগানের ভেতর নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা ৮-৯ জন যুবক প্রথমে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না পেয়ে তারা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং ওই নারীকে মারধর ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। ঘটনার ভিডিও ধারণ করে ভয়ভীতিও দেখানো হয়।

পরে স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ ভুক্তভোগী নারী ও তার বন্ধুকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

এই বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘আমার ওপর যারা নৃশংস অত্যাচার করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমার বন্ধু যদি জড়িত থাকে তারও বিচার চাই।’

তার বন্ধু জানান, ‘আমি অনার্সের ছাত্র। আমাকে ব্লেড- ছুরি দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। মারধর করে আলাদা জায়গায় নেয়। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত আটকে রাখে।’

বন বিভাগের বাগান মালি জাকির হোসেন বলেন, ‘রাতে দেখি একটি ছেলে আরেকটি ছেলের কাছে ক্ষমা চাইছে। কাছে যেতেই আমাকে তাড়িয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর বোরকা পরা এক নারী বের হয়ে রাস্তা জিজ্ঞেস করেন। পরে রাত ১২টার দিকে কয়েকজন এসে অফিসে ভাঙচুর করে এবং আমাকে মারধর করে।’

এসডিএস নির্বাহী পরিচালক রাবেয়া বেগম বলেন, ‘ওই নারীর ওপর নির্যাতন হয়েছে তা পরিষ্কার। সোশাল মিডিয়ায় নারীর চরিত্র নিয়ে মন্তব্য করা বন্ধ হওয়া উচিত। নির্যাতনের বিচার পাওয়ার অধিকার তার আছে।’

সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. মিতু আক্তার বলেন, ‘নারীটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। যেহেতু তিনি বিবাহিত, তাই চূড়ান্ত নিশ্চিত হতে ডিএনএ রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম জানান, মামলা রুজু হওয়ার পর চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে এবং বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।