Image description

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সরকারি সার বিতরণে ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও কালোবাজারির অভিযোগে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় কৃষি মৌসুম শুরু হওয়ায় প্রতিদিন ভোর থেকেই কৃষকেরা সার সংগ্রহে লাইনে দাঁড়ালেও অনেকেই খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। তবে বস্তাপ্রতি ৭০০-৮০০ টাকা বেশি দিলেই কালোবাজারিদের মাধ্যমে সহজেই সার পাওয়া যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা।

গত ১৮ নভেম্বর ভোর ৬টার দিকে সরকারি বিতরণের ডিএপি সার পাচারের সময় স্থানীয় কৃষকেরা ২০ বস্তা সারসহ তাহাজ্জাক হোসেন (৪০) নামে এক ব্যবসায়ীকে আটক করেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে। তবে কৃষকদের দাবি, এ ঘটনার পরও সার বিতরণে অনিয়ম কমেনি; বরং দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। সময়মতো সার না পেয়ে উপজেলার হাজারো কৃষক এখন চরম হতাশায়; অনেকের জমির ফসলও নষ্ট হওয়ার উপক্রম।

কলেনটিয়ার কৃষক জিয়াউর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকি, কিন্তু ডিলাররা তাদের আত্মীয়-স্বজন আর পছন্দের লোকজনকে আগে সার দেয়। শেষে আমরা কিছুই পাই না।’

জয়নগরের কৃষক ইউসুফ আলী জানান, ‘ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে থেকেও সার পাই না। কিন্তু বস্তা প্রতি ৮০০ টাকা বেশি দিলে বাজারে ঠিকই পাওয়া যাচ্ছে। কৃষি অফিসে অভিযোগ করেও কোনো ফল দেখছি না।’

কৃষি উদ্যোক্তা ইব্রাহিম হোসেনের অভিযোগ, ‘ডিলাররা সরকারি নির্ধারিত দামে সার না দিয়ে গোপনে মজুদ করছেন। পরে এগুলো অতিরিক্ত দামে বিক্রি করা হচ্ছে। তদারকির অভাবেই দীর্ঘদিন ধরে এ অনিয়ম চলছে।’

এ বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানাজ পারভীন লাবনী বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা আছে। ফিল্ড অফিসাররা মাঠে কাজ করছেন। খুব শিগগিরই এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইনশাআল্লাহ দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’

কৃষকেরা আশা করছেন, প্রশাসনের কঠোর মনিটরিং, অভিযানের মাধ্যমে অনিয়ম-দুর্নীতি রোধ করা গেলে তারা সরকারি নির্ধারিত মূল্যে স্বাচ্ছন্দ্যে সার সংগ্রহ করতে পারবেন।