Image description

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে বিনামূল্যের সরকারি ওষুধ পেতে টাকা দিতে হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। টাকা না দিলে ওষুধ তো মেলেই না, উল্টো জুটছে দুর্ব্যবহার। এমন অভিযোগ সেবা নিতে আসা নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষদের।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া যায়। দেখা যায়, চিকিৎসা নিতে আসা এক দরিদ্র নারীর কাছ থেকে ওষুধ দেওয়ার বিনিময়ে টাকা নিচ্ছেন কেন্দ্রের কর্মচারী দুলাল। ওই নারী ২৫ টাকা দিলেও তাতে সন্তুষ্ট হননি দুলাল। কাঙ্ক্ষিত টাকার চেয়ে কম দেওয়ায় তিনি ওই নারীর সঙ্গে কটূক্তি করেন। একপর্যায়ে গণমাধ্যমকর্মীর উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ওই নারীকে টাকা ছাড়াই চলে যেতে বলেন।

ভুক্তভোগী ওই নারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সকাল থেকে শরীর খুব খারাপ, গলা ব্যথা। ওষুধ কেনার সামর্থ্য নেই বলে সরকারি হাসপাতালে এসেছি। ওষুধ নেওয়ার পর ২৫ টাকা দিয়েছি, আর ৫ টাকা রেখেছিলাম ছেলের জন্য ললিপপ কিনব বলে। কিন্তু উনি (দুলাল) তা মানতে চাচ্ছিলেন না। আমি চলে আসার সময় পেছন থেকে বাজে কথা শুনিয়েছেন।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি ওষুধ বিতরণে কোনো ফি নেওয়ার নিয়ম না থাকলেও এখানে টাকা ছাড়া সেবা মেলে না। আগে ১০ টাকা নেওয়া হলেও এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকা দাবি করা হয়। টাকা বাড়িয়ে দিলে পছন্দের ব্যক্তিদের অতিরিক্ত ওষুধ দেওয়া হয়। আর টাকা না দিলে ওষুধ দিতে চান না, কখনও কখনও নানা কটূক্তিও করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাজারিখীলের এক বাসিন্দা জানান, ‘আগে ১০ টাকা নিত, এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকা দাবি করে। ১০ টাকা দিলেও নিতে চায় না।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কর্মচারী দুলাল বলেন, ‘সরকারি কোনো ফি নেই। তবে কেন্দ্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ও পানির খরচ বাবদ দিনে কয়েকজনের কাছ থেকে ১০ টাকা করে ৫০-১০০ টাকা নিই। সেটাও সবাই দেয় না।’

এ বিষয়ে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জসীম উদ্দিন বলেন, ‘সরকারি ওষুধ বিতরণে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। অভিযোগের সত্যতা ও প্রমাণ পেলে ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’