নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় জনস্বার্থে নির্মিত একটি কালভার্ট এখন এলাকাবাসীর জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণ করলেও দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় কালভার্টটি জনসাধারণের কোনো কাজেই আসছে না। দীর্ঘ সময় ধরে অকেজো পড়ে থাকায় স্থানীয়দের কাছে এটি এখন ‘গলার কাঁটা’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাদিরপুর ও সদরের মাঝামাঝি স্থানে কালভার্টটি দাঁড়িয়ে আছে। ১৫টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সেতুবন্ধন হওয়ার কথা ছিল এই কালভার্টটির। কিন্তু দু’পাশে মাটি বা রাস্তা না থাকায় এটি এখন পানির মাঝে এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই পথ দিয়ে যাতায়াত করলেও কালভার্টটি ব্যবহার করতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে দীর্ঘ পথ ঘুরে অথবা কর্দমাক্ত পথ মাড়িয়ে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে।
হাওরাঞ্চলের ভৌগোলিক কারণে বছরের প্রায় ছয় মাস এই এলাকা পানির নিচে থাকে। বর্ষাকালে যাতায়াতের জন্য নৌকা ব্যবহার করা হলেও শুকনো মৌসুমে এই পথটিই একমাত্র ভরসা। গুরুত্বপূর্ণ এই পয়েন্টে কালভার্টটি অকেজো হয়ে থাকায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী এবং জরুরি চিকিৎসাসেবা প্রত্যাশী রোগীরা। বিশেষ করে কৃষিপণ্য পরিবহনে কৃষকদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত খরচ ও শ্রম।
স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “কালভার্ট হয়েছে ঠিকই, কিন্তু দুই পাশে রাস্তা না থাকায় আমাদের কোনো লাভ হয়নি। উল্টো এটি এখন আমাদের জন্য ‘কাল’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি এই স্থাপনাটি এভাবে পড়ে থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারি নেই।”
এলাকাবাসীর দাবি, অবিলম্বে কালভার্টের দুই পাশে মাটি ভরাট করে চলাচলের উপযোগী সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হোক। অন্যথায় সরকারি অর্থের অপচয় হওয়ার পাশাপাশি জনদুর্ভোগ আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে।
এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগী কয়েক হাজার মানুষ।




Comments