Image description

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় চলতি রবি মৌসুমে ভুট্টা চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা এবং গত কয়েক বছর ধরে ভালো দাম পাওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। মাঠজুড়ে এখন জমি প্রস্তুত, বীজ বপন ও সেচ কার্যক্রমে কৃষকদের কর্মচাঞ্চল্য চোখে পড়ার মতো।

উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল ও সমতল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই লাঙল, বীজ আর সার নিয়ে মাঠে নেমে পড়ছেন চাষিরা। আধুনিক চাষপদ্ধতি ও উন্নত জাতের বীজ ব্যবহারের ফলে এ অঞ্চলে ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। কম খরচে স্বল্প সময়ে অধিক লাভ হওয়ায় অনেকেই অন্যান্য ফসলের পরিবর্তে ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন।

স্থানীয় চাষি করিম হোসেন জানান, “ভুট্টা চাষে খরচ অন্য ফসলের চেয়ে কম এবং ফলনও বেশ ভালো হয়। বাজারে ভালো দাম পেলে এ বছর বড় অংকের লাভের আশা করছি।” তবে কৃষক রাহুল মিয়া কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “ভুট্টা চাষ লাভজনক হলেও সেচ ও সারের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ কিছুটা বেড়ে গেছে। সময়মতো ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা গেলে আমাদের দুশ্চিন্তা থাকবে না।”

আরেক কৃষক মফিজ উদ্দিন জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী তারা হাইব্রিড জাতের বীজ ও সুষম সার ব্যবহার করছেন। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ না থাকায় এবং আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে কাজিপুর উপজেলায় ৮ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু কৃষকদের ব্যাপক আগ্রহের কারণে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বর্তমানে প্রায় ৮ হাজার ৯১৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে।

কাজিপুর উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ বলেন, “ভুট্টা এখন এ অঞ্চলের কৃষকদের জন্য একটি লাভজনক অর্থকরী ফসল। আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ ও আধুনিক প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে আসছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং সময়মতো সেচ ও পরিচর্যা নিশ্চিত করা গেলে এ বছর কাজিপুরে ভুট্টার রেকর্ড ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা গেলে চরাঞ্চলের এই বিশাল এলাকা দেশের ভুট্টার চাহিদা পূরণে আরও বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।