ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর বান্দরবানে সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। আগুনে ভবনের নিচতলায় থাকা দুটি প্রাইভেটকার, দুটি মোটরসাইকেলসহ বিপুল পরিমাণ মূল্যবান আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর পেয়ে বান্দরবান শহরের ট্র্যাফিক মোড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে ২০-২৫ জনের একটি দল। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বীর বাহাদুরের বাসভবনের পেছনে জড়ো হয়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা পেছনের গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে টায়ার জ্বালিয়ে গ্যারেজে থাকা প্রাইভেটকারে আগুন ধরিয়ে দেয়।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে তারা কাজ শুরু করতে পারেনি। এসময় আন্দোলনকারীরা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি হোস পাইপ কেটে ফেলে। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। ততক্ষণে ভবনের নিচতলা ও যানবাহনগুলো ভস্মীভূত হয়ে যায়।
হামলার সময় বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে রাজীব নামে এক পুলিশ কনস্টেবল গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁর মাথায় ছয়টি সেলাই দিতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস পরিদর্শক ইফতেখার মাহমুদ বলেন, “রাত ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে আমরা সংবাদ পাই। কিন্তু পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকায় এবং আন্দোলনকারীদের বাধার কারণে শুরুতে কাজ করা সম্ভব হয়নি। আমাদের সরঞ্জামেরও ক্ষতি করা হয়েছে।”
এদিকে, এই ঘটনার পর শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বান্দরবান পুলিশ সুপার (এসপি) কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এসময় আন্দোলনকারীরা সাবেক এমপি বীর বাহাদুরসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন।
বান্দরবান সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মান্না দে জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতের হামলায় এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বর্তমানে শহরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।




Comments