সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত অবস্থায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত বাংলাদেশি সৈনিক মো. শামীম রেজার (২৮) মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর নিজ গ্রাম রাজবাড়ীতে দাফন করা হয়েছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হোগলাডাঙ্গি গ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
এর আগে দুপুর ২টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে শামীম রেজার মরদেহ কালুখালী উপজেলা মিনি স্টেডিয়ামে আনা হয়। সেখান থেকে মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। স্বজনদের গগনবিদারী আর্তনাদে এলাকার আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। জানাজার আগে সেনাবাহিনীর একটি চৌকস দল তাঁকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে। এরপর সেনাবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়।
শামীম রেজা রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার হোগলাডাঙ্গি গ্রামের মো. আলমগীর ফকিরের বড় ছেলে। তাঁর বাবা স্থানীয় একটি মসজিদের খাদেম। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে শামীম ছিলেন সবার বড় এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। মাত্র দেড় বছর আগে তিনি বিয়ে করেছিলেন। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে পরিবারের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
নিহতের ছোট ভাই সোহেল ফকির বলেন, "আমার ভাই ছিলেন আমাদের পরিবারের মেরুদণ্ড। তাঁর মৃত্যুতে আমরা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছি। দায়িত্ব পালনকালে তিনি দেশের ও মানবতার জন্য শহীদ হয়েছেন। আমরা সরকারের কাছে আমাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।"
স্থানীয়রা জানান, শামীম রেজা অত্যন্ত বিনয়ী ও পরোপকারী মানুষ ছিলেন। এলাকায় তাঁর বিশেষ সুনাম ছিল। সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তিনি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই (Abyei) এলাকায় শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় শামীম রেজাসহ মোট ৬ জন বাংলাদেশি সৈনিক শহীদ হন। আজ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও বিনম্র শ্রদ্ধার মধ্য দিয়ে এই বীর সন্তানকে চিরবিদায় জানালো তাঁর জন্মমাটির মানুষ।




Comments