Image description

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার পাইকারি বাজারগুলোতে শীতকালীন সবজির সরবরাহ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম কেজিতে অন্তত ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। বাজারে সবজির পর্যাপ্ত জোগান ও কম দামে ক্রেতারা খুশি হলেও উৎপাদন খরচ তুলতে না পেরে চরম হতাশায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভোরের আলো ফোটার আগেই মাঠ থেকে তোলা তাজা সবজিতে ভরে উঠছে আড়তগুলো। সরবরাহ বাড়ায় অধিকাংশ সবজি এখন সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে।

আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতাদের তথ্যমতে, বর্তমানে বাজারে শসা, করলা ও টমেটো প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে অন্যান্য অধিকাংশ সবজি ২০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। বিস্তারিত বাজার দর নিচে দেওয়া হলো:

বেগুন ও গাজর: ৩৫-৪০ টাকা (প্রতি কেজি)

শিম, মুলা ও পেঁপে: ২০ টাকা (প্রতি কেজি)

নতুন আলু ও বাঁধাকপি: ১৫-২০ টাকা (প্রতি কেজি)

ব্রকলি: ৪০ টাকা ও কাঁচা মরিচ: ৫০ টাকা (প্রতি কেজি)

লাউ: ২০ টাকা (প্রতি পিস)

বাজারে আসা গৃহিণী আয়েশা আক্তার বলেন, “সবজির দাম কমায় আমাদের নিত্যদিনের খরচ কিছুটা কমেছে। তবে পেঁয়াজের দাম এখনো চড়া থাকায় পুরোপুরি স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারের এই পরিস্থিতি স্থায়ী হলে মধ্যবিত্তদের জন্য বড় উপকার হবে।”

অন্যদিকে, সবজির দামে এই বড় পতন কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, বীজ, সার ও শ্রমিকের মজুরি বাবদ যে খরচ হয়েছে, বর্তমান বাজারে সবজি বিক্রি করে সেই উৎপাদন খরচই উঠছে না। বাজারে অতিরিক্ত সরবরাহের কারণে অনেক সময় কম দামেও পাইকার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে লোকসান দিয়ে সবজি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

সবজির বাজার নিম্নমুখী হলেও চালের বাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা গেছে। খোলা পোলাও চালের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বর্তমানে ১৩০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। তবে মসুর ডাল ও ছোলার দাম কিছুটা কমেছে; বড় দানার মসুর ডাল কেজিপ্রতি ৯০ টাকা এবং ছোলা ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিম ও মুরগির মাংসের দাম বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৫০-১৬০ টাকা এবং ডিমের ডজন ১১০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সবজির ফলন ভালো হয়েছে। তবে কৃষকদের লোকসানের হাত থেকে বাঁচাতে সরকারিভাবে সবজি সংরক্ষণ বা হিমাগার ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।