চোর সন্দেহে মেকানিককে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ৪
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে চোর সন্দেহে মো. ফোরকান মিয়া (৩৫) নামে এক মোটরসাইকেল মেকানিককে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে বাঞ্ছারামপুর পৌরসভার আসাদনগর এলাকায় এই পৈশাচিক ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
নিহত ফোরকান মিয়া বাঞ্ছারামপুর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পৌরসভার মাতুর বাড়ির মোড়ে একটি গ্যারেজে মেকানিক হিসেবে কাজ করতেন।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে আসাদনগর বাজারে ‘ভাই ভাই ভাঙারি দোকানে’ এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলাম রবিন ও খাইরুন ইসলাম হৃদয় চোর সন্দেহে ফোরকানকে তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ওই দোকানে নিয়ে যান। সেখানে দোকান মালিক শফিকুল ইসলামসহ অন্যরা লোহার শিকল দিয়ে ফোরকানের হাত-পা বেঁধে ফেলেন। এরপর স্টিলের পাইপ, লোহার হাতুড়ি ও অ্যালুমিনিয়ামের গামলা দিয়ে তাকে দীর্ঘক্ষণ বেধড়ক মারধর করা হয়।
বর্বরোচিত এই নির্যাতনের একপর্যায়ে আসামিরা ফোরকানের স্ত্রী শারমিন আক্তারের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে তার স্বামীর আর্তচিৎকার শোনায়। ফোনে ফোরকান তার স্ত্রীকে জানান যে, তাকে নির্মমভাবে পেটানো হচ্ছে। পরে ফোরকানের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে আসামিরা এক রিকশাচালকের মাধ্যমে তাকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল সম্পন্ন করে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর ও অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শারমিন আক্তার বাদী হয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা (মামলা নং-০৮, ধারা- ৩০২/৩৪) দায়ের করেছেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শফিকুল ইসলাম (৪৪), মো. জাহিদুল ইসলাম রবিন (১৯), মো. রিমন মিয়া (৩০) এবং মো. খাইরুন ইসলাম ওরফে হৃদয় (২০)।
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানা পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চোর সন্দেহে এমন আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।




Comments