Image description

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে একটি পরিত্যক্ত ভবনে চলছে সরকারের আটটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দাপ্তরিক কার্যক্রম। ভবনটির জরাজীর্ণ দশা এবং ছাদ ধসে পড়ার আশঙ্কায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চরম আতঙ্কের মধ্যে প্রতিদিন দায়িত্ব পালন করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর আগেই উপজেলা পরিষদের এই পুরনো ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলা পরিষদের জন্য একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। তবে নতুন ভবনে পর্যাপ্ত স্থান সংকুলান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত এই ভবনেই রয়ে গেছে আটটি দপ্তরের কার্যক্রম।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবনটির প্রতিটি কলাম ফেটে ভেতরের রড বেরিয়ে এসেছে। দেয়াল ও ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে নিয়মিত। ছাদ ধসে পড়া ঠেকাতে পুরনো একটি ব্রিজের বিম দিয়ে খুঁটি বানিয়ে কোনোমতে সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছে। বর্ষাকালে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে আসবাবপত্র ও কম্পিউটার নষ্ট হচ্ছে। স্যাঁতস্যাঁতে ও নোংরা পরিবেশে মানবেতরভাবে কাজ করতে হচ্ছে সবাইকে।

বর্তমানে এই ভবনে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, উপজেলা সমবায় অধিদপ্তর, তথ্য সেবা কেন্দ্র, উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এবং পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মিলন বলেন, “বর্ষা মৌসুমে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে মেঝেতে জমে যায়। ভবন ধসে পড়ার ভয়ে পুরনো ব্রিজের বিম দিয়ে খুঁটি বানিয়ে সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এই স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে আমাদের মূল্যবান কম্পিউটার ও আসবাবপত্র নষ্ট হচ্ছে। সবচেয়ে বড় শঙ্কা হলো, ছোটখাটো ভূমিকম্প বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে যেকোনো সময় বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারে।”

এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আলী ইবনে আব্বাস জানান, অনেক আগেই উপজেলা পরিষদের তিনটি ভবন ও তিনটি ডরমিটরি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু নতুন ভবনে সব দপ্তরের স্থান সংকুলান না হওয়ায় কয়েকটি দপ্তর বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে কাজ করছে।

এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালেহ আহমেদ বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। সরকারি দপ্তরের কার্যক্রমগুলো নিরাপদ পরিবেশে সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”