Image description

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে রাজনীতির হিসাব-নিকাশ দ্রুত বদলে যাচ্ছে। এ আসনে ভোটের মাঠে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতার স্পষ্ট আভাস মিলছে, যেখানে বিএনপির অভ্যন্তরীণ অবস্থান ও ইসলামপন্থী দলের রাজনীতির ভূমিকা নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

বিএনপি তাদের যুগপৎ আন্দোলনের শরিক গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে আসনটি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও সেই সিদ্ধান্ত কার্যত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এতে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সমর্থক ভোট বিভক্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

অন্যদিকে এ পরিস্থিতিকে সুযোগ হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক মু. শাহ আলম ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। দীর্ঘদিনের শিক্ষকতা, সাংগঠনিক সম্পৃক্ততা এবং এলাকায় পরিচিত মুখ হওয়ায় তিনি মাঠে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারেন বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী ও বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী ও বিএনপির বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে ভোটের দ্বন্দ্ব তৈরি হলে, সেই ফাঁক দিয়ে ইসলামপন্থী ভোট ব্যাংককে একত্রিত করার সুযোগ পেতে পারে জামায়াতে ইসলামী। বিশেষ করে ইসলামপন্থী আটদলীয় জোট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতের প্রার্থী চূড়ান্ত হলে এই সমীকরণ আরও স্পষ্ট হতে পারে।

তবে এ সম্ভাবনার মধ্যেও অনিশ্চয়তা রয়েছে। ইসলামপন্থী আটদলীয় জোট থেকে যদি শেষ মুহূর্তে জামায়াতের বাইরে অন্য কোনো দলকে প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়, তাহলে এখন পর্যন্ত গড়ে ওঠা অনুকূল পরিস্থিতি ভেঙে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে জামায়াতের জন্য তৈরি হওয়া ‘সুযোগের জানালা’ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন স্থানীয়রা।

এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মুফতি আবু বকর সিদ্দীকও এই আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন, যা ইসলামপন্থী ভোট বিভাজনের সম্ভাবনাকে আরও জটিল করে তুলছে। অন্যদিকে নুরুল হক নুরের সঙ্গে বিএনপির আসন সমঝোতায় পটুয়াখালী-৩ আসনে ধানের শীষ প্রতীক না থাকায় কিছুটা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যেই নুরুল হক নুরের পক্ষে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছে দলটির নেতারা।