ফেনীর পরশুরামে গত চার দিনের টানা শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হাড়কাঁপানো শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না, ফলে স্থবিরতা নেমে এসেছে জনজীবনে। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষরা কর্মহীন হয়ে পড়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এদিকে তীব্র শীতের প্রভাবে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ নানা শীতজনিত রোগ।
পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন গড়ে ১২ থেকে ১৫ জন রোগী শীতজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। যাদের অবস্থা বেশি গুরুতর, তাদের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং বাকিদের প্রাথমিক পরামর্শ দিয়ে বাসায় পাঠানো হচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খোন্দকিয়া গ্রামের মিটন দাস জানান, তাঁর সন্তান সাত দিন ধরে সর্দি, কাশি ও জ্বরে ভুগছে। ডাক্তার জানিয়েছেন সুস্থ হতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে।
তাহমিনা আক্তার নামে ১৪ মাস বয়সী এক শিশুর মা আয়েশা আক্তার বলেন, "শীতের শুরুতে বাচ্চার জ্বর ও গলা ব্যথা শুরু হয়। হাসপাতালে আনার পর ডাক্তার জানিয়েছেন ওর নিউমোনিয়া হয়েছে এবং বুকের ডান পাশে কফ জমেছে।" একই অবস্থা ফাতেমা নামের এক মায়ের শিশুরও, যার নিউমোনিয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, শৈত্যপ্রবাহের কারণে শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি সবচেয়ে বেশি দেখা দিচ্ছে। রোগীর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ খুব দ্রুত শিশু ওয়ার্ডে বেডের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। জনবল সংকট থাকলেও বিদ্যমান জনবল দিয়ে রোগীদের সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।
পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার ইফতেখার আহমেদ জানান, "গত কয়েক দিনের শৈত্যপ্রবাহে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অনেক শিশু নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হয়েছে। আমরা গুরুত্বের সাথে রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছি। আশা করছি, আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হলে রোগীর সংখ্যা কমে আসবে।"
চিকিৎসকরা এই সময়ে শিশুদের বাড়তি যত্ন নেওয়া, গরম কাপড় পরিধান করা এবং ঠান্ডা ও ধুলোবালি থেকে দূরে রাখার জন্য অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়েছেন।
মানবকণ্ঠ/ডিআর




Comments