Image description

মানুষ হিসেবে শাশুড়ি আমাদের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি কেবল পরিবারের একজন সদস্য নন, বরং অভিভাবক এবং মায়ের প্রতিরূপ। এই বিশেষ সম্পর্ককে সম্মান জানাতে প্রতি বছর অক্টোবরের চতুর্থ রোববার উদযাপন করা হয় ‘শাশুড়ি দিবস’। সেই হিসেবে আজ আমরা উদযাপন করছি এই দিন।

আজকের দিনে শাশুড়িকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানাতে পারেন, তার খোঁজখবর নিতে পারেন এবং অনুভব করাতে পারেন যে, তার গুরুত্ব আপনার জীবনে অপরিসীম। যেসব দম্পতির বিয়ের কথা চলছে, তারা হবু শাশুড়িকে শুভেচ্ছা জানালে সম্পর্ক আরও মজবুত হওয়ার সুযোগ পেতে পারেন।

ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক শাশুড়ি দিবস অক্টোবরের চতুর্থ রোববার পালিত হয়। ১৯৩৩ সালের ৫ মার্চ, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের আমারিলো শহরে স্থানীয় একটি পত্রিকার সম্পাদক প্রথমবারের মতো এই দিবস উদযাপন করেন। পরে এটি অক্টোবরের চতুর্থ রোববারে স্থায়ীভাবে পালন করার নিয়ম করা হয়। মূল উদ্দেশ্য স্পষ্ট—শাশুড়িকে সম্মান দেওয়া।

শাশুড়িকে সম্মান জানানো শুধু শুভেচ্ছা বা উপহার দিয়ে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। দাম্পত্য ও পারিবারিক সম্পর্ক মজবুত করতে শাশুড়ির মন জয় করা খুব জরুরি। এর জন্য কয়েকটি কার্যকর কৌশল হলো:

ভদ্রতা বজায় রাখুন:
শাশুড়ির সঙ্গে কখনো অভদ্র আচরণ করবেন না। যে কোনো বিষয় নিয়ে ঠান্ডা মাথায় উত্তর দিন। ভদ্রতার কারণে ও বয়সের খাতিরে শাশুড়ি নিজে আপনার কদর করবেন। কোনো তুচ্ছ বিষয়ে তর্কে জড়াবেন না।

শিষ্টাচার বজায় রাখুন:
শাশুড়ি আপনাকে নানা বিষয়ে কটূ কথা শোনালেও ধৈর্য ধরে তার সঙ্গে আলাপ করুন। ছোটখাট বিষয়ে তার সঙ্গে আলাপ করুন এবং ধন্যবাদ জানান। এতে তার মন জয় করা সহজ হয়।

স্বামীর সম্পর্কে ভালো কথা বলুন:
কখনো শাশুড়ির কাছে স্বামীর খারাপ কথা বলবেন না। ধরুন আপনার সম্পর্ক খুবই ভালো, তবুও শাশুড়ির কাছে নেতিবাচক মন্তব্য করবেন না। এতে তার মনে আপনার প্রতি নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে।

তার প্রশংসা করুন:
শাশুড়ি যদি রান্না করেন বা কোনো আয়োজন করেন, তার প্রশংসা জানাতে ভুলবেন না। এতে দেখবেন শাশুড়ির মন গলে যাচ্ছে এবং তিনি আপনার প্রতি ইতিবাচক অনুভূতি রাখবেন।

তার পরামর্শ নিন:
জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শাশুড়ির মতামত নিন। তার মন্তব্যকে হেলাফেলা করবেন না। তার পরামর্শকে গুরুত্ব দিন। এতে শাশুড়ি খুশি হবেন এবং স্বামীও আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হবেন।

উপহার দিন:
সময়ের সুযোগে শাশুড়িকে উপহার দিন। এটি তার খুশি বাড়াবে। উপহার যত বেশি ব্যক্তিগত ও মনযোগী হবে, তার প্রতিক্রিয়া তত ভালো হবে।

সব কাজে সাহায্য করুন:
আপনি কর্মজীবী হলে হয়তো সব সময়ই ব্যস্ত থাকেন। তবুও সময় পেলেই শাশুড়িকে কাজে সাহায্য করুন। এতে তিনি দেখবেন আপনি যত্নশীল এবং তার মূল্য দেন।

আত্মবিশ্বাসী হন:
শাশুড়ি আপনাকে নানা কারণে ধমক দিতে পারেন। এতে বিচলিত হবেন না এবং ক্ষোভ প্রকাশ করবেন না। বরং নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসী হন এবং শাশুড়ির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন। এতে তিনি আপনার প্রতি গর্ব অনুভব করবেন।

শাশুড়ি দিবস উদযাপন শুধু মেয়েদের দৃষ্টিকোণেই সীমাবদ্ধ নয়। ছেলে ও মেয়ের পক্ষের সকলকে সমানভাবে শ্বশুর-শাশুড়ির প্রতি ভালবাসা, শ্রদ্ধা ও দায়িত্ববোধ দেখানো উচিত। সম্পর্ককে সুদৃঢ় করতে এবং পুরো পরিবারের বন্ধন শক্তিশালী করতে এটি একটি অনন্য সুযোগ।

আজকের দিনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, শাশুড়ির প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান কেবল সামাজিক ভ্রাতৃত্বের প্রতীক নয়; এটি দাম্পত্য ও পরিবারের মানসিক সুস্থতার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আজ শাশুড়িকে ফোন দিন, খোঁজ নিন, ছোট উপহার দিন এবং আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানান।