পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’ নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পরও দমে যাননি বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। বরং গত ৬ ডিসেম্বর মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর থেকে তার ডাকে অভাবনীয় সাড়া মিলেছে। দান হিসেবে আসছে নগদ টাকা, ইট ও বালু। সোমবার পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, একদিনেই ১ কোটি ১০ লাখ রুপির বেশি অনুদান জমা পড়েছে।
জানা গেছে, রবিবার রাতে সভাস্থল থেকে দানবাক্স হিসেবে রাখা ১১টি বড় স্টিলের ট্রাঙ্ক হুমায়ুন কবীরের বাড়িতে আনা হয়। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারিতে টাকা গণনার কাজ চলছে। ‘পশ্চিমবঙ্গ ইসলামিক ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া’র আলেমদের তত্ত্বাবধানে ৩০ জন ব্যক্তি এই গণনার কাজে যুক্ত আছেন। নোট গুনতে ব্যবহার করা হচ্ছে মেশিন।
সোমবার সকাল পর্যন্ত ৭টি ট্রাঙ্ক খুলে প্রায় ৩৭ লাখ রুপি নগদ পাওয়া গেছে। এছাড়া অনলাইনে হুমায়ুন কবীরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ৯৩ লাখ রুপি। সব মিলিয়ে অনুদানের পরিমাণ ১ কোটি ৩০ লাখ রুপি ছুঁইছুঁই। হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, ব্যাংকে অনবরত টাকা ট্রান্সফার হচ্ছে এবং গণনা শেষ হতে বিকেল গড়িয়ে যাবে।
গত ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনেই মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন হুমায়ুন। তিনি জানান, এই মসজিদ নির্মাণে আনুমানিক ৩০০ কোটি রুপি খরচ হবে। তবে অর্থের জোগান নিয়ে তিনি চিন্তিত নন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি একাই ৮০ কোটি রুপি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া সাধারণ মানুষ জমি, হাজার হাজার বস্তা বালু এবং লাখ লাখ ইট দান করছেন।
গত ৪ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বহরমপুরের এক সভায় হুমায়ুন কবীরকে দল থেকে সাসপেন্ডের কথা জানানো হয়। এরপরই ক্ষুব্ধ হুমায়ুন সভাস্থল ত্যাগ করেন এবং ২২ ডিসেম্বর নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তার দল রাজ্যের ৩০০ আসনের মধ্যে ১৩৫টিতে প্রার্থী দেবে। মূলত বাবরি মসজিদ নির্মাণের ইস্যু এবং মুসলিম ভোটারদের একত্রিত করার ডাক তাকে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তৃণমূল থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর এই মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ হুমায়ুন কবীরকে স্থানীয়দের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় করে তুলেছে, যার প্রমাণ মিলছে দানের এই বহরে।




Comments