প্রায় তিন দশক আগে যে রানাতুঙ্গা ১৯৯৬ বিশ্বকাপে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে গোটা শ্রীলঙ্কাকে আনন্দে ভাসিয়েছিলেন, এবার তাঁকেই গ্রেপ্তার করতে যাচ্ছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। দুর্নীতির অভিযোগে দেশে ফিরলেই গ্রেপ্তার করা হবে সাবেক এই অধিনায়ক রানাতুঙ্গাকে।
গতকাল সোমবার কলম্বোর একটি আদালতকে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির দুর্নীতি তদন্ত কমিশন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীর দায়িত্বে থাকাকালীন তেল ক্রয়সংক্রান্ত একটি চুক্তিতে বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে রানাতুঙ্গার বিরুদ্ধে।
শ্রীলঙ্কার দুর্নীতি তদন্ত কমিশনের দাবি, রানাতুঙ্গা ও তাঁর ভাই দীর্ঘমেয়াদি তেল আমদানি চুক্তির নিয়ম পরিবর্তন করে বেশি দামে স্পট মার্কেট থেকে তেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ২০১৭ সালে স্পট মার্কেট থেকে ২৭ দফা তেল ক্রয়ের ফলে রাষ্ট্রের প্রায় ৮০ কোটি শ্রীলঙ্কার রুপি ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি দেশটির দুর্নীতি দমন সংস্থার। বাংলাদেশি অর্থমূল্যে যা প্রায় ৩১ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
কমিশন আদালতকে জানিয়েছে, রানাতুঙ্গা বর্তমানে শ্রীলঙ্কার বাইরে অবস্থান করছেন। আর শ্রীলঙ্কায় ফিরলেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে।
এদিকে রানাতুঙ্গা পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর বড় ভাই ধাম্মিকা রানাতুঙ্গা ওই সময় রাষ্ট্রায়ত্ত সিলন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। সোমবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলেও পরে জামিনে মুক্তি পান ধাম্মিকা। জামিনে বের হলেও রাম্মিকার ওপর বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। রানাতুঙ্গার বড় ভাই ধাম্মিকা শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী বছরের ১৩ মার্চ নির্ধারণ করা হয়েছে।
রানাতুঙ্গা ভাইদের বিরুদ্ধে এই মামলাটি শ্রীলঙ্কার বর্তমান প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েক সরকারের দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের অংশ। গত বছর ক্ষমতায় বসেই তিনি দীর্ঘদিনের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, রানাতুঙ্গা পরিবারের আরেক ভাই, সাবেক পর্যটনমন্ত্রী প্রসন্ন রানাতুঙ্গাও গত মাসে বিমা জালিয়াতির একটি মামলায় গত মাসে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ওই মামলাটি এখনও বিচারাধীন। তবে ২০২২ সালের জুনে এক ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় দুই বছরের স্থগিত কারাদণ্ড পেয়েছেন প্রসন্ন।




Comments