বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর কথিত নির্যাতনের প্রতিবাদে এবার কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস (ডেপুটি হাই কমিশন) ঘেরাওয়ের চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি জানিয়েছেন, আগামী জানুয়ারি মাসে গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে আসা প্রায় ৫ লাখ হিন্দু সন্ন্যাসীকে নিয়ে তিনি এই ঘেরাও কর্মসূচি পালন করবেন।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে কলকাতার পার্ক সার্কাস সংলগ্ন বেগবাগান মোড়ে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “আজ এখানে ১ হাজার সাধু এসেছেন। কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলায় ৫ লাখ সাধু আসবেন। গঙ্গাসাগরে পূণ্যস্নান সেরে ফেরার পথে আমি সব সাধুকে বাবুঘাট থেকে পথ দেখিয়ে মিশনের সামনে নিয়ে আসব। তখন দেখা যাবে পুলিশের কত ক্ষমতা আমাদের আটকানোর।”
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কলকাতা পুলিশের ওপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মমতা যতই প্রাচীর বা পুলিশ দিয়ে মিশন পাহারা দিক, বাংলাদেশ সরকার যদি হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে তবে নতুন বছরের আগেই সব ব্যারিকেড তুলে ফেলে দেব।” তিনি সরাসরি কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মাকে উদ্দেশ্য করে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।
বিজেপি এবং সাধু-সন্ন্যাসীদের একটি প্রতিনিধি দল এদিন কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে স্মারকলিপি জমা দেয়। এর আগে ‘হিন্দু সংহতি মঞ্চ’ নামে একটি সংগঠনের কয়েকশ সদস্য শিয়ালদহ স্টেশন থেকে মিছিল করে মিশনের উদ্দেশ্যে রওনা হলে পুলিশ তাদের ২০০ মিটার আগেই আটকে দেয়। পরে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলকে স্মারকলিপি দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে শুক্রবার কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস এলাকাটি কার্যত দুর্গে পরিণত হয়েছিল। বড় বড় লোহার ব্যারিকেড, লোহার খাঁচা, জলকামান এবং কয়েকশ লাঠধারী পুলিশ মোতায়েন করা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে কাঁদানে গ্যাস ও প্রিজন ভ্যানও প্রস্তুত রাখা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বিভিন্ন সময় হিন্দুদের নিরাপত্তার দাবিতে ভারতে বিজেপি ও অন্যান্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো বিক্ষোভ করে আসছে। শুভেন্দু অধিকারীর এই ‘৫ লাখ সন্ন্যাসী’ নিয়ে ঘেরাওয়ের হুমকি কলকাতায় এক নতুন রাজনৈতিক উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে।




Comments