Image description

আধুনিক জীবনে স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ— এই তিনটি সমস্যা একে অপরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত। চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত ওজন যেমন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়, তেমনি ডায়াবেটিস ও স্থূলতা উভয়েই হৃদরোগের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস এই তিন সমস্যার ঝুঁকি কমাতে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পুষ্টিবিদদের মতে, বিশেষ তিনটি ‘সুপারফুড’ নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে এসব জটিলতা অনেককাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। জেনে নিন সেই খাবারগুলো সম্পর্কে:

১. পালং শাক: পুষ্টির আধার যেকোনো সুস্থ মানুষের ডায়েট চার্টে সবুজ শাকসবজি থাকা জরুরি, যার মধ্যে পালং শাক অন্যতম। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।

উপকারিতা: পালং শাকে উচ্চমাত্রায় ফাইবার ও পানি থাকায় এটি ওজন কমাতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে (ডায়াবেটিস) দারুণ কার্যকর। এছাড়া এতে থাকা নাইট্রেট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে।

খাওয়ার উপায়: এটি তরকারি হিসেবে খাওয়ার পাশাপাশি স্যুপ, সালাদ বা স্ন্যাকস হিসেবেও খাদ্যতালিকায় যোগ করা যায়।

২. বাদাম: খনিজ ও প্রোটিনের উৎস বাদাম বিশেষ করে কাঠবাদাম বা চিনা বাদাম শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ কমাতে এবং হার্ট ভালো রাখতে সহায়তা করে।

উপকারিতা: বাদাম প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে এবং ঘন ঘন ক্ষুধা পাওয়া কমায়। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ সহজ হয় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

খাওয়ার উপায়: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে কয়েকটি বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করুন। এটি সরাসরি খাওয়ার পাশাপাশি স্মুদি বা বিকেলের নাস্তাতেও যুক্ত করা যায়।

৩. সবুজ মুগ ডাল: হৃদযন্ত্রের বন্ধু সবুজ মুগ ডাল শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং ফ্রি র‍্যাডিক্যালের কারণে হওয়া ক্ষতি রোধ করতে সক্ষম। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অত্যন্ত কম, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আদর্শ।

উপকারিতা: উচ্চ ফাইবার ও প্রোটিন সমৃদ্ধ এই ডাল দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধা মেটায় এবং রক্তে হঠাৎ চিনির মাত্রা বাড়তে দেয় না। যারা ওজন কমানোর যুদ্ধে আছেন, তাদের জন্য এটি একটি শক্তিশালী খাবার।

খাওয়ার উপায়: মুগ ডাল দিয়ে তৈরি স্যুপ, খিচুড়ি বা তরকারি দুপুরের বা রাতের খাবারে রাখা যেতে পারে।

সুস্থ থাকতে কেবল ডায়েট নয়, বরং এই খাবারগুলোর নিয়মিত ব্যবহার ও সঠিক জীবনযাপন পদ্ধতি অনুসরণ করা প্রয়োজন। কোনো বিশেষ শারীরিক অবস্থা থাকলে খাদ্যতালিকায় পরিবর্তনের আগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।