দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অধ্যাদেশ, ২০২৫ থেকে ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’ গঠনের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সুপারিশটি বাদ দেয়ায় তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি প্রশ্ন তুলেছে, সংস্কারের নামে সরকারের এই অবস্থান কি প্রমাণ করে যে রাষ্ট্রসংস্কার তাদের কাছে শুধুই ফাঁকাবুলি? শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে টিআইবি এই প্রতিক্রিয়া জানায়।
বিবৃতিতে টিআইবি অভিযোগ করে, জুলাই সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর পূর্ণ ঐকমত্য এবং টিআইবির দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সংস্কার কমিশন ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’ গঠনের সুপারিশ করেছিল। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সম্মতির পরও চূড়ান্ত অধ্যাদেশে এটি বাদ দেয়া হয়েছে। টিআইবি মনে করে, এটি সরকারের অভ্যন্তরে থাকা সংস্কার-বিরোধী মহলের ষড়যন্ত্র এবং রাষ্ট্র সংস্কার প্রক্রিয়ার জিম্মিদশার পরিচায়ক।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গত দুই দশকের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, দুদক সবসময় জনআস্থার সংকটে ভুগেছে এবং ক্ষমতাসীনদের সুরক্ষাসহ প্রতিপক্ষকে দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এই অচলায়তন ভাঙতেই একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’র প্রস্তাব করা হয়েছিল, যা ষাণ্মাসিক পর্যালোচনা ও গণশুনানির মাধ্যমে দুদকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করত। সরকার কৌশলগত এই সুপারিশটি অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছে, যা রাষ্ট্রসংস্কারের অঙ্গীকারের সঙ্গে স্ববিরোধী।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে অন্তর্বর্তী সরকারের অন্তত সাতজন উপদেষ্টা এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন, যদিও জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারী রাজনৈতিক দলগুলো এতে একমত ছিল। ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রশ্ন রাখেন, এত রক্তক্ষয়ী আত্মত্যাগের পর দুর্নীতি দমনের পথ রুদ্ধ করে রাষ্ট্রসংস্কার কীভাবে সম্ভব? সরকারের এমন সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলোকেও জুলাই সনদ লঙ্ঘনে উৎসাহিত করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে টিআইবি।




Comments