মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অস্থিরতার জেরে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ কোনোভাবেই থামছে না। গত এক মাসে নতুন করে আরও ২ হাজার ৭৩৮ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) প্রকাশিত সংস্থাটির মাসিক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত—এই এক বছরে বাংলাদেশে নতুন নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩৭৮ জনে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত অক্টোবর পর্যন্ত ১১ মাসে এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬৪০। আর সেপ্টেম্বরে তা ছিল ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৫১ জন। অর্থাৎ, গত তিন মাসে ধারাবাহিকভাবে সীমান্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনা বেড়েছে।
ক্যাম্পগুলোতে জনসংখ্যার চাপ
ইউএনএইচসিআর জানায়, বর্তমানে কক্সবাজার ও ভাসানচরের বিভিন্ন ক্যাম্পে সব মিলিয়ে ১১ লাখ ৭৩ হাজার ১৭১ জন রোহিঙ্গাকে চিহ্নিত করা গেছে। ২০১৭ সালের আগস্টে বড় ধরনের ঢল নামার পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৯ লাখ ৯৪ হাজার ৯৩৭ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
যে কারণে বাড়ছে অনুপ্রবেশ
মূলত ২০২৪ সাল থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করে। ক্রমবর্ধমান এই সহিংসতার জেরে প্রাণ বাঁচাতে আবারও সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গারা। সংস্থাটি জানায়, ২০২৪ সালের শেষ দিক থেকে ক্যাম্পগুলোতে নতুন আগতদের একটি বড় ঢল দেখা দেয়, যাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের কাজ চলমান রয়েছে।
নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি
নতুন করে নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৭৮ শতাংশই নারী ও শিশু। এদের মধ্যে ১২ শতাংশ ‘বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত। এর মধ্যে রয়েছেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, গুরুতর অসুস্থ রোগী, একক অভিভাবক, সঙ্গীহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং ঝুঁকিতে থাকা বয়স্করা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ৫২ শতাংশ নারী এবং ৪৮ শতাংশ পুরুষ।




Comments