Image description

ভারতে মুসলিম ও খ্রিষ্টানসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর ক্রমবর্ধমান নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে জনকূটনীতি বিভাগের মহাপরিচালক মাহবুবুল আলম এই উদ্বেগের কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে মাহবুবুল আলম বলেন, "ভারতে মুসলিম ও খ্রিষ্টানসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ড, গণপিটুনি, নির্বিচার আটক এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাধার ঘটনাগুলো অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশ এই ধরনের লক্ষ্যভিত্তিক সহিংসতাকে ঘৃণাজনিত অপরাধ হিসেবে গণ্য করে।"

ভারতের সাম্প্রতিক কিছু সুনির্দিষ্ট ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওড়িশায় মুসলিম যুবক জুয়েল রানাকে নৃশংসভাবে হত্যা, বিহারে মুহাম্মদ আতাহার হোসেনের হত্যাকাণ্ড এবং কেরালায় বাংলাদেশি সন্দেহে এক নিরীহ ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাগুলো মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এ ছাড়া গত সপ্তাহে বড়দিন উদযাপনকালে ভারতজুড়ে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ওপর যে গণসহিংসতা চালানো হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করেছে।

বাংলাদেশ সরকার আশা প্রকাশ করেছে যে, ভারত সরকার এসব অমানবিক ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করবে এবং দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনবে। মাহবুবুল আলম বলেন, "প্রতিটি রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব হলো তার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সুরক্ষা ও মর্যাদা প্রদান করা। আমরা প্রত্যাশা করি, ভারত তার এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে।"

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত দুদিন আগে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছিল। ভারতের সেই মন্তব্যের রেশ কাটতে না কাটতেই আজ পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভারতের অভ্যন্তরে সংখ্যালঘু নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরল বাংলাদেশ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতের একপাক্ষিক প্রচারণার বিপরীতে বাংলাদেশ এই কড়া প্রতিবাদের মাধ্যমে শক্তিশালী কূটনৈতিক অবস্থান ব্যক্ত করল।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতি এমন এক সময়ে এলো যখন প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সংখ্যালঘুদের অধিকার ও সুরক্ষা নিয়ে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় চলছে। বাংলাদেশ সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সব ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং লক্ষ্যভিত্তিক সহিংসতা বন্ধ করা জরুরি।