Image description

ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদরের ৪ ইউনিয়ন) আসনে উৎসবমুখর ও টানটান উত্তজনাপূর্ণ পরিবেশে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন প্রার্থীরা। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা রেজওয়ানা নাহিদের কাছে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন মো. রাশেদ খান। অন্যদিকে, দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ।

সোমবার দুপুর আড়াইটায় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা চত্বরে পৌঁছান রাশেদ খান। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ, ঝিনাইদহ-১ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ও সদ্য পদত্যাগ করা অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান খান, ঝিনাইদহ-৩ আসনের প্রার্থী মেহেদী হাসান রনি এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনাসহ স্থানীয় শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।

মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে রাশেদ খান বলেন, “তারেক রহমান আমাকে ধানের শীষের আমানত দিয়ে পাঠিয়েছেন। আমি এলাকার উন্নয়নে কাজ করতে চাই। বিজয়ী হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটাব। কোনো দলাদলি থাকবে না।” তিনি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষকে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান।

এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন সাইফুল ইসলাম ফিরোজ। এ সময় তিনি আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, “ভারাক্রান্ত মনে নির্বাচনে লড়ছি। নেত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে, আর আমি তাঁর জন্য মাঠে লড়াই করছি। আশা করছি তারেক রহমান ধানের শীষ আমার হাতেই ফিরিয়ে দেবেন। ভোটারদের বলব, ধানের শীষ আমার হাতে না আসা পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে।”

উল্লেখ্য, স্থানীয় কাউকে মনোনয়ন না দেওয়ায় গত শনিবার তিনি এক সমাবেশে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং তাঁর অনুসারীরা কাফনের কাপড় পরে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।

মনোনয়ন জমা শেষে জেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মজিদ বলেন, “রাশেদ খান কোনো ব্যক্তি নন, তিনি তারেক রহমানের প্রতিনিধি। জাতীয় এই সংকটে ব্যক্তিগত ভেদাভেদ ভুলে দলের স্বার্থে সবাইকে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করতে হবে।” তিনি সাইফুল ইসলাম ফিরোজসহ অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার অনুরোধ জানান।

সদ্য পদত্যাগ করা অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান খান বলেন, “রাশেদ খান ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের অগ্রসৈনিক। যারা মনোনয়ন পাননি, তাদের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে বড় বড় নেতারাও হারিয়ে গেছেন। তাই শহীদ জিয়ার আদর্শ রক্ষায় রাশেদ খানের পাশে থাকতে হবে।”

উল্লেখ্য, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান গত শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলে তাঁকে ঝিনাইদহ-৪ আসনে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়। তবে ‘বহিরাগত’ প্রার্থীকে মেনে নিতে না পেরে স্থানীয় বিএনপির একটি বড় অংশ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।

ঝিনাইদহ-৪ আসনটি কালীগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও সদরের ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। আগামী সংসদ নির্বাচনে এ আসনে ১২০টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৪৬১ জন। মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনে বড় দুই নেতার উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

মানবকণ্ঠ/ডিআর