কোটা সংস্কার আন্দোলনে জঙ্গিরা ঢুকে একদিকে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে অন্যদিকে সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে ‘জাতীয় শোক দিবস স্মরণে’ বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, কোটা ইস্যুকে কেন্দ্র করে এমন সহিংসতা, হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে জঙ্গিরা। তারা একদিকে যেমন মানুষ মেরেছে অন্যদিকে মানুষকে সেবা দেওয়া জিনিসের ওপর ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।
শতভাগ দাবি মেনে নেয়ার পরও কোটা সংস্কার আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি শতভাগ মেনে নিয়েছি। দাবি মানার পর আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কি যৌক্তিকতা আছে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনের সময় একদিকে বিক্ষোভ চলছিল অপরদিকে জঙ্গি ঢুকে হত্যাকাণ্ড চালানোর পাশাপাশি সরকারের সেবাদান প্রতিষ্ঠানগুলোতে অগ্নিসংযোগ করা হলো। সেতু ভবন, ডাটা সেন্টার, বিটিভি, সাবমেরিন ক্যাবল, হাসপাতাল থেকে শুরু করে বহু সেবাদান প্রতিষ্ঠানে আগুন দেওয়া হল। শুধু তাই নয়- সিটি করপোরেশনের ময়লা ফেলার অত্যন্ত আধুনিক গাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষকে এখন সব সুবিধা দিয়ে সহযোগিতা করছি একটি শিক্ষিত জাতি তৈরির জন্য। আমরা যখন উন্নত জাতির জন্য কাজ করে যাচ্ছিলাম তখন দেখলাম পাকিস্তানের প্রেতাত্মা এখনও ছাড়েনি। এত অপপ্রচারের পরও মেহনতী মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন, আমার চলার পথ সহজ ছিল না। অনেক চড়াই-উতরাই, ঘাত-প্রতিঘাত, গুলি, বোমা, গ্রেনেড হামলার মুখোমুখি হতে হয়েছে আমাকে। বার বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। যেখানে গেছি সেখানে হামলার শিকার হয়েছি।
সরকারপ্রধান বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন তাদের তদন্তের বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ দলকে স্বাগত জানাবে বাংলাদেশ। জাতিসংঘ বা কোন দেশ চাইলে টিম পাঠাতে পারে।
তিনি বলেন, ১ আগস্ট রক্তদান কর্মসূচির মাধ্যম আমরা শোকের মাস শুরু করেছি। সব সংগঠনের নেতাদের এই শোকের মাসে শুধু শোক পালন নয়, মানুষের জন্য কাজ করতে হবে, মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে জাতির পিতার আদর্শ ও লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হবে। জাতির পিতা তো এ জাতির জন্য কাজ করে গেছেন। কাফনের কাপড় ছাড়া কিছুই নিয়ে যাননি। শুধু দিয়েই গেছেন। তার সেই আদর্শ আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে।
কৃষকলীগের সভাপতি সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক উম্মুল কুলসুম স্মৃতির সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য দেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, কৃষি সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সাম্প্রতিক সময়ে নিহতদের স্মরণে ও ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
মানবকণ্ঠ/এফআই
Comments