Image description

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ভারতের আসাম ও ত্রিপুরায় উজানে ভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, ফেনী, লালমনিরহাট, নীলফামারী, শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। বুধবার (১ অক্টোবর) কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী মো. মাহমুদুল ইসলাম শোভন স্বাক্ষরিত এক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

লঘুচাপ ও ভারি বর্ষণের পূর্বাভাস

পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপ আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। এটি পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ উড়িষ্যা–উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগে এবং উজানে ভারতের ত্রিপুরা ও আসামে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ৪ অক্টোবর সকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিচ্ছিন্নভাবে ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে।

নদীর পানি বৃদ্ধি ও বন্যার সম্ভাবনা

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বিভাগের গোমতী, মুহুরী, সেলোনিয়া ও ফেনী নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী তিন দিনে মুহুরী ও সেলোনিয়া নদী ফেনীতে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। ফেনী নদী চট্টগ্রাম অংশে সতর্কসীমায় প্রবাহিত হয়ে নদীসংলগ্ন এলাকায় সাময়িক প্লাবন ঘটাতে পারে।

রংপুর বিভাগে ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি কমলেও তিস্তার পানি স্থিতিশীল রয়েছে। আগামী তিন দিনে তিস্তা সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে, যার ফলে লালমনিরহাট ও নীলফামারীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ময়মনসিংহ বিভাগের কংস, সোমেশ্বরী ও ভূগাই নদীর পানি আগামী তিন দিনে বাড়তে পারে। এর ফলে শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণার নিম্নাঞ্চল বন্যাকবলিত হতে পারে।

উপকূলীয় এলাকায় জোয়ার ও ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কা

বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় নদীগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে উচ্চ জোয়ার বিরাজ করছে, যা আগামী তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে। লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলে ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ঢাকায় রেকর্ড বৃষ্টিপাত, জলাবদ্ধতার শঙ্কা

ঢাকায় বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২০৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এর মধ্যে মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা এ সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আগামী চার দিন ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে। এ কারণে নগরীর জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষকে আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান

ভারি বৃষ্টি ও সম্ভাব্য বন্যার কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।