
অর্থবছরের শেষ দিনেও প্রশাসনের ব্যয়-সংক্রান্ত বিল নিয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটরা একমত হতে না পারায় যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে এ-সংক্রান্ত বিল পাস করা যায়নি। ফলে ছয় বছর পর আবারও শাটডাউন বা অচলাবস্থার মুখে পড়েছে মার্কিন সরকার।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে সরকারি তহবিল থেকে অর্থ ছাড় বন্ধ হয়ে গেছে। এতে জরুরি সেবা ছাড়া অন্য সব সরকারি কাজ বন্ধ থাকছে। বিমান চলাচলসহ অনেক জরুরি সেবাও ব্যাহত হচ্ছে।
এ অচলাবস্থার প্রভাব পড়ছে বিশ্বের নানা দেশে মার্কিন দূতাবাসের কার্যক্রমে। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের লোগোর ছবিসহ দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, ‘পূর্ণ কার্যক্রম শুরু না হওয়া পর্যন্ত বরাদ্দের ঘাটতির কারণে জরুরি নিরাপত্তাবিষয়ক তথ্য ব্যতীত এ অ্যাকাউন্টটি নিয়মিত আপডেট করা হবে না। এ সময়ে পরিস্থিতি অনুযায়ী পূর্বনির্ধারিত পাসপোর্ট ও ভিসা সার্ভিস অব্যাহত থাকবে।’
বিবিসি লিখেছে, অচলাবস্থার কারণে মার্কিন ফেডারেল সরকারের ৪০ শতাংশ কর্মী অবৈতনিক ছুটিতে গেছেন। এ সংখ্যা সাড়ে সাত লাখের চেয়ে কম নয়।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের শাটডাউন হয় ২০১৮-১৯ সালে। তখনও ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এবার শাটডাউন হলে ফেডারেল সরকারে ব্যাপক কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেন ট্রাম্প।
তাঁর নির্দেশনা অনুসারে, কয়েক দিন আগেই অফিস অব বাজেট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থাগুলোকে ‘জনবল হ্রাসের’ পরিকল্পনার খসড়া তৈরি শুরু করতে বলেছে। সাধারণভাবে এ ধরনের শাটডাউনের ক্ষেত্রে জরুরি নয় এমন সরকারি কর্মীরা ‘আনপেইড লিভ’ অর্থাৎ, অবৈতনিক ছুটিতে থাকেন।
আলজাজিরা লিখেছে, শাটডাউনের কারণে বিভিন্ন দেশে ভিসা সেবাও ব্যাহত হচ্ছে। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা তাদের ৮৩ শতাংশ কর্মীকে অবৈতনিক কর্মবিরতিতে পাঠিয়েছে। গতকাল বুধবার ওয়েবসাইটে দেওয়া বিবৃতিতে তারা বলছে, নাসা সরকারি অর্থায়নের অভাবে সাময়িক বন্ধ থাকবে।
স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। প্রতি আউন্সের দাম হয়েছে ৩ হাজার ৮৯৫ ডলার। পুরো যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন পার্কের সেবা কার্যক্রম স্থগিত হয়ে গেছে। ৯ হাজার ২০০-এর বেশি কর্মীকে অবৈতনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
গত মঙ্গলবারই ছিল চলতি অর্থবছরের শেষ দিন। এদিনই সরকারের ব্যয়ের জন্য বরাদ্দ তহবিলের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু সিনেটে বিলটি নিয়ে একমত হতে পারেননি রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট সদস্যরা। গতকাল বুধবার বিবিসি জানায়, সাধারণত পহেলা অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রে নতুন অর্থবছর শুরু হওয়ার আগে যদি কোনো চুক্তিতে পৌঁছানো না যায়, তাহলে শাটডাউন তৈরি হয়।
Comments