জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দুই নেতার নামে নতুন দুটি টেলিভিশন চ্যানেলের লাইসেন্স প্রদান নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি এই প্রক্রিয়ায় সরকারের অস্বচ্ছতা ও পক্ষপাতমূলক মনোভাবের অভিযোগ তুলেছেন। একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন।
নুরুল হক নুর বলেন, “শুনেছি এনসিপির নেতৃবৃন্দের নামে দুটি গণমাধ্যমের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যে দুইজনের নামে হয়েছে, তাদের আমি ভালোভাবে চিনি। তারা নিজেদের পরিবার নিয়ে চলতে হিমশিম খাচ্ছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আমি একটি দলের প্রধান, কিন্তু ৫ আগস্টের পরেও যেখানে ছিলাম, সেখানেই আছি। তারা আমার সহকর্মী ছিলেন। তারা ছোট একটি পত্রিকায় চাকরি করেন, অত ভালো বেতনও পান না। মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় তাদের কেউ কাজ করেন না। কোথ থেকে কীভাবে এই লাইসেন্স দেওয়া হলো, সেটা আমি জানি না। এটা দেখে আমি খুবই অবাক হয়েছি।”
নুর এই ঘটনার মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অস্বচ্ছতা ও পক্ষপাতের প্রকাশ পেয়েছে বলে মনে করেন। তিনি বলেন, “ওয়ান ইলেভেনের সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুরুতে যেভাবে পদক্ষেপ নিয়েছিল, মানুষকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনার চেষ্টা করেছিল, এই গণ-অভ্যুত্থানের সরকারে আমরা সেটা দেখিনি। বরং পুরনো স্টাইলে ভাগ-বাটোয়ারা, নিয়ন্ত্রণ, লোকজন বসানো, আর প্রতিষ্ঠান দখলের মতো ঘটনা চলছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “৫ আগস্টের পর অনেক গণমাধ্যম দখল হয়েছে। এগুলো আমরা এই সরকারের কাছ থেকে প্রত্যাশা করিনি। এই সরকারে যারা আছেন, তাদের এর দায় নিতে হবে।”
নতুন টিভি চ্যানেলের লাইসেন্স: গত মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকার দুটি নতুন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদন দিয়েছে। চ্যানেল দুটির নাম ‘নেক্সট টিভি’ এবং ‘লাইভ টিভি’। ‘নেক্সট টিভি’র লাইসেন্স পেয়েছেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. আরিফুর রহমান তুহিন। তিনি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য হিসেবে যোগ দেন এবং এর আগে একটি ইংরেজি দৈনিকে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। এনসিপি গঠনের পর তিনি দলটির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়কের দায়িত্ব পান।
অন্যদিকে, ‘লাইভ টিভি’র লাইসেন্স পেয়েছেন আরিফুর রহমান নামের আরেক ব্যক্তি। তিনি ছয় বছর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে পড়াশোনা শেষ করেন। ছাত্রজীবনে তিনি একটি ইংরেজি দৈনিকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ছিলেন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ছিলেন, তবে এনসিপিতে যোগ দেননি।
নুরুল হক নুরের এই মন্তব্য নতুন টিভি চ্যানেলের লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই ঘটনা সরকারের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, যা আগামী দিনে আরও আলোচনার জন্ম দিতে পারে।




Comments