Image description

গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থ লোপাটের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয় ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুবাশ্বিরা আতিয়া তমা বাদী হয়ে কমিশনের ঢাকা-১ কার্যালয়ে মামলা করেন। 

অভিযোগ করা হয়েছে, জয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) পরিচালনার জন্য চাপ প্রয়োগ করে ২৩টি কোম্পানির কাছ থেকে অনুদানের নামে ৪৫ কোটি ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা গ্রহণ করেছেন। এই প্রতিষ্ঠানের নামে ২৫টি ব্যাংক হিসাবে ৪৩৯ কোটি ৬ লাখ ৭৯ হাজার টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। নামসর্বস্ব এই প্রতিষ্ঠানের নামে লোপাট করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। আয়কর আইন লঙ্ঘন করে ৩৬ লাখ ৫২ হাজার টাকার আয়কর ফাঁকি দিয়ে সরকারের ক্ষতি সাধন করা হয়েছে। 

জয় সিআরআইর চেয়ারম্যান ও ট্রাস্টি, পুতুল ভাইস চেয়ারম্যান ও ট্রাস্টির দায়িত্বে ছিলেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার ছেলে সিআরআইয়ের ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, প্রতিষ্ঠানের ট্রাস্টি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ (বিপু), এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শাব্বির বিন শামস, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া ও এনবিআরের কর আপিল বিভাগের সদস্য রওশন আরা আক্তার। 

এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে জনকল্যাণে সিআরআই নামে একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রাপ্ত টাকা আয়কর আইনের ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে আয়কর মওকুফ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করিয়েছেন। তারা অন্যায়ভাবে একে অপরকে লাভবান করে অপরাধমূলক অসদাচরণ এবং অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন। জনকল্যাণমূলক কাজ না করে এবং সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান না হওয়া সত্ত্বেও এসআরও জারি করে কর সুবিধা প্রদান করে ও গ্রহণ করে অবৈধভাবে চাপ প্রয়োগ করে অনুদান গ্রহণের মাধ্যমে সিআরআইর হিসাবে ২৩টি কোম্পানির কাছ থেকে ৪৫ কোটি ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা গ্রহণ করেছেন। 

অভিযোগ করা হয়েছে, ২০১৩-১৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত মোট ১০০ কোটি ৩১ লাখ ৪০ হাজার টাকা অবৈধভাবে আয় করা হয়। ওই সময়ে গ্রহণযোগ্য ব্যয় ২৯ কোটি ৫০ লাখ ৯৮ হাজার টাকা বাদে সিআরআইয়ের হিসাবে জমা থাকার কথা ৭০ কোটি ৮০ লাখ ৪২ হাজার টাকা। অথচ বর্তমানে স্থিতি রয়েছে ৫৫ কোটি ১১ লাখ ৮২ হাজার টাকা। অর্থাৎ, ওই আয় থেকে ১৫ কোটি ৬৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।