শীত আসার আগে যশোরের অভয়নগরে শুরু হয়েছে খেজুরের গাছ প্রস্তুতের কাজ। গাছিরা দড়ি, দা, ঠুঙ্গি সহ গাছ তোলার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বছর অভয়নগর উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৪শ ১০ জন গাছি গাছ তোলা ও রস সংগ্রহ শুরু করেছেন। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ হতে শুরু হবে গুড় উৎপাদন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অভয়নগরে গ্রামে গ্রামে চলছে খেজুর গাছ প্রস্তুত করার কাজ। রাস্তার ধারে কিংবা জমির আইলে থাকা খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। দা দিয়ে নিপুণ হাতে খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করছেন তারা। গাছের মাথা পরিষ্কারের পর গাছগুলোকে দুই সপ্তাহের বিশ্রাম দেওয়ার পর রস সংগ্রহ শুরু করবেন। এই মৌসুমে খেজুরের রস দিয়ে গ্রামীণ জনপদে শুরু হবে শীতের আমেজ। শীত যত বাড়বে, খেজুর রসের মিষ্টিও তত বাড়বে। শীতের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ দিনের শুরুতে খেজুরের রস, সন্ধ্যার রস ও খেজুরের গুড় পাটালি। পিঠা ও পায়েস তৈরিতে আবহমান কাল থেকে খেজুরের গুড় ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
সিদ্ধিপাশা গ্রামের গাছি তৈয়বুর রহমান গাজী বলেন, ‘গত বছর আমি রস বিক্রয় করে খুব লাভবান হয়েছিলাম, এই জন্য এ বছর খেজুর গাছ অনেক বেশি কেটেছি। আশা করছি এই বছর আরো বেশি লাভবান হবো।’
একই গ্রামের গাছি ইলিয়াস শেখ বলেন, ‘আমাদের খেজুরের গাছ কাটা শুরু করেছি। আর অল্পকিছু দিনের মধ্যে রস বের হবে। সেই রস দিয়ে আমরা যশোর জেলার ঐতিহ্যবাহী গুড় পাটালি তৈরি করবো এবং বাজারে বিক্রয় করে অনেক লাভবান হবো।’
অভয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলছেন, ‘১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সালে খেজুরের গুড় জিআই পণ্য হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে। বর্তমানে এ উপজেলায় ৩০ হাজার রস আহরণকারী খেজুরের গাছ রয়েছে, যা থেকে প্রায় ৩৫০ মেট্রিক টন পর্যন্ত গুড় উৎপাদন হবে। এই গুড় যাতে ভেজালমুক্ত হয় সে ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তৎপর থাকবে।’




Comments