সম্প্রতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শরীরচর্চার শিক্ষক পদ বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। দেশের প্রাথমিক শিক্ষার মান এবং শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশকে প্রভাবিত করতে পারে এমন এই সিদ্ধান্তকে সামনে রেখে, দেশের শীর্ষ সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট প্রতিবাদ জানিয়েছে।

শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানটের সংস্কৃতি-ভবনের সামনে শিল্পী, শিক্ষার্থী এবং শুভানুধ্যায়ীরা একত্র হয়ে গানের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারকে অনুরোধ জানান।

ছায়ানটের সভাপতি ডা. সারওয়ার আলীর সভাপতিত্বে সংগীতশিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল, বুলবুল ইসলাম, কল্পনা আনাম, শারমিন সাথী ইসলাম, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরীসহ সংস্কৃতিকর্মীরা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা বলেন, ‘শিশুর সৃজনশীলতা, আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে সংগীত ও শারীরচর্চা অপরিহার্য। উদার, সহিষ্ণু ও সৃজনশীল সমাজ গড়ার জন্য এই দুই বিষয়ের বিকল্প নেই। শিক্ষার এই গুরুত্বপূর্ণ অংশকে বাদ দেওয়া মানে শিশুর সামগ্রিক বিকাশকে ক্ষতিগ্রস্ত করা।’

সরকারি সূত্রে জানা যায়, নতুন সৃষ্টি করা সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক পদ দুটি ধর্মভিত্তিক কিছু সংগঠনের সমালোচনার মুখে বাতিল করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০২৫’-এ কিছু ‘শব্দগত পরিবর্তন’ও আনা হয়েছে, যা শিক্ষকদের নিয়োগ ও পাঠ্যক্রম পরিচালনায় প্রভাব ফেলতে পারে।

ছায়ানটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই পদ বাতিলের ফলে শুধু শিক্ষকের কর্মসংস্থান নয়, শিশুর মৌলিক শিক্ষার সুযোগও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সংগঠনটি সরকারের কাছে শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষানীতি বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছে। 

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা, সাংস্কৃতিক শিক্ষার গুরুত্ব এবং সরকারের নীতির পুনর্বিবেচনার আহ্বান নিয়ে আরও সচেতনতা তৈরি হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে। ছায়ানটের এই উদ্যোগ দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতার একটি শক্তিশালী প্রতীক হিসেবে দেখছেন সাধারণ মানুষ।