জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণে সময় বৃদ্ধিসহ মোট ১২টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৭ হাজার ১৫০ কোটি ৯০ লাখ টাকা, যা সম্পূর্ণভাবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে সংস্থান করা হবে। সোমবার ঢাকার শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে ৯টি নতুন, ২টি সংশোধিত এবং ১টি ব্যয় না বাড়িয়ে মেয়াদ বাড়ানোর প্রকল্প। তবে, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘ভূমি নিবন্ধন ব্যবস্থাপনা অটোমেশন’ প্রকল্পটি অনুমোদন না দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
অনুমোদিত প্রধান প্রকল্পসমূহ:
গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন: মানিকগঞ্জ ও সাতক্ষীরার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।
সেচ ব্যবস্থাপনা: কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণার হাওর এলাকায় ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন।
শিক্ষা খাত: গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প এবং চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে একটি করে নতুন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপন।
স্বাস্থ্যসেবা: সমাপ্ত চতুর্থ সেক্টর কর্মসূচির অসমাপ্ত মা, শিশু ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বাস্তবায়ন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর, নিপোর্ট ও নার্সিং অধিদপ্তরের সমন্বিত উন্নয়ন, এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন চলমান কর্মসূচির অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করা।
প্রতিরক্ষা: ঢাকা সেনানিবাসের নির্ঝর এলাকায় অফিসারদের জন্য ‘বি’ টাইপ বাসস্থান নির্মাণ।
যোগাযোগ: নড়াইল-কালিয়া মহাসড়কের ২১তম কিলোমিটারে নবগঙ্গা নদীর ওপর কালিয়া সেতু নির্মাণ।
শিল্প: ‘বিসিক শিল্প পার্ক, টাঙ্গাইল’।
ঐতিহ্য সংরক্ষণ: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (সময় বৃদ্ধিসহ)।
বৈঠকে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছেন এমন নয়টি প্রকল্প সম্পর্কেও একনেক সদস্যদের অবহিত করা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে: শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর শক্তিশালীকরণ, বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, যুবদের আত্মরক্ষামূলক মৌলিক প্রশিক্ষণ এবং তরুণদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিতে দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প। এছাড়া, উপকূলীয় বন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জলবায়ু সহনশীলতা বাড়ানো, মেহেরপুর সদরে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন ও গবেষণা জোরদার, ঢাকা শহরের অবকাঠামো ও পরিবেশ উন্নয়ন এবং র্যাবের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রকল্পও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার পাশাপাশি পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক ও প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প ও গৃহায়ণ উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সড়ক পরিবহণ ও রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ ও পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থানীয় সরকার ও যুব উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম (বীরপ্রতীক) এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. হোসেনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।




Comments