ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বর 'জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস' উপলক্ষ্যে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আয়োজনে" জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের চেতনা ও আজকের বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১৬ই নভেম্বর) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমীরুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল বলেন, যে দল ৭ই নভেম্বরের মতো একটি ঐতিহাসিক দিন উপহার দিতে পারে, সেই দলকে সংস্কার শেখানোর প্রয়োজন নেই। যে নেতা সকল বাধা অতিক্রম করে বাংলাদেশের সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ যুক্ত করতে পারেন, সেই নেতার দলকে ইসলাম শেখানোরও দরকার হয় না।
তিনি বলেন, ৭ই নভেম্বরের পর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একটি ভঙ্গুর দেশকে বিশ্বের কাছে একটি মর্যাদাবান স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। অথচ যারা—জামায়াতের মতো—কখনো দুই-তিনটির বেশি আসনে জয়লাভ করতে পারেনি, তারা আজ সংস্কারের কথা বলে।
একসময় যখন প্রায় সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ছিল, তখন আওয়ামী লীগসহ জামায়াতকে বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। দেশে সরকার গঠনের জন্য যখন ১৫১টি সংসদীয় আসন প্রয়োজন, তখন সেই কঠিন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল—বিএনপি।
তিনি আরও বলেন, দেশের হতাশাগ্রস্ত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে পাঠিয়ে তাদের স্বাবলম্বী করেছিলেন শহীদ জিয়া। এতে তারা শুধু কর্মজীবী মানুষে পরিণত হননি, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও স্বয়ংসম্পূর্ণতায় পৌঁছেছিল।
সংস্কারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে দল ৭ই নভেম্বর আনতে পারে, যে দল সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ লিখতে পারে—সেই দলকে অন্য কোনো দল এসে সংস্কার বা ধর্ম শেখাবে, তা হতে পারে না।
জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম রাবি শাখার সভাপতি আব্দুল আলীম বলেন, আজকের এই আলোচনা সভা ৭ই নভেম্বরের ঐতিহাসিক গুরুত্বকে স্মরণ করার জন্যই আয়োজন করা হয়েছে। ৭ই নভেম্বরের সেই বিপ্লব ও সংহতির রূপকার ছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তাঁর দূরদৃষ্টি, নেতৃত্বগুণ এবং দেশপ্রেমই বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিল।
রাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার এক ঐতিহাসিক দিন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে দেশের মানুষ গণতন্ত্র, মুক্তচেতনা ও জাতীয় চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। এই জাতীয় বিপ্লবের মধ্য দিয়ে জনগণের মাঝে দেশপ্রেম, দায়িত্ববোধ ও দেশের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা প্রতিফলিত হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশনায়ক তারেক রহমান উল্লেখ করেছেন ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর ছিল এই দেশের শত্রু-মিত্র চেনার দিন। বর্তমানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশপ্রেমিক সব জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধ রয়েছে।
সুলতান আহমেদ রাহী অভিযোগ করে বলেন, ৫ই আগস্টের পর অনেকেই ধর্মকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার মাধ্যমে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পায়তারা করছে। এমন মুনাফেকি কর্মকাণ্ড থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, উক্ত আলোচনা সভায় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের অন্তর্ভুক্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের প্রায় দুই শতাধিক নেতা–কর্মী উপস্থিত ছিলেন।




Comments