রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন
অক্টোবরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৪১ জন, আহত ১১২৮
গত অক্টোবর মাসে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৮৬টি দুর্ঘটনায় ৪৪১ জন নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন ১১২৮ জন। এরমধ্যে ১৯২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৩৭ জন। এই সময়ে ৯টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত এবং ৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ৪৬টি রেল দুর্ঘটনায় ৪৩ জন নিহত এবং ১২ জন আহত হয়েছেন।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১২১টি দুর্ঘটনায় ১১২ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ২৬টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত হয়েছেন।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) সংবাদ মাধ্যমে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো দুর্ঘটনা প্রতিবেদনে এ পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৩৭ জন, বাসের যাত্রী ৩০ জন, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রলি আরোহী ২৪ জন, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস আরোহী ৭ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী ১০৩ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-টমটম-মাহিন্দ্র) ৩৪ জন এবং রিকশা-বাইসাইকেল আরোহী ৮ জন নিহত হয়েছেন।
গত সেপ্টেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিল ১৩.৯ জন। অক্টোবর মাসে নিহত হয়েছে ১৪.৭ জন। এই হিসেবে অক্টোবর মাসে প্রাণহানি বেড়েছে ৫.৭৫ শতাংশ।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৬৬টি জাতীয় মহাসড়কে, ১৪৮টি আঞ্চলিক সড়কে, ৮১টি গ্রামীণ সড়কে এবং ৮৭টি শহরের সড়কে এবং ৪টি অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৯৯টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২১৭টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৩টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৬০টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৭টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে— ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; ত্রুটিপূর্ণ সড়ক; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএ-র সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজিকে।
সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে— দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা (সার্ভিস রোড) তৈরি করতে হবে; পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; রেল ও নৌ-পথ সংস্কার করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে; টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।




Comments