রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তিন শিক্ষার্থীর ওপর হামলা ও মারধরের প্রতিবাদে রাজশাহী-নাটোর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেট এলাকায় তারা এই অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে কাজলা এলাকার একটি ক্যানটিন থেকে দুই শিক্ষার্থীকে রামদা ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে মারধর করে দুর্বৃত্তরা। হামলায় আরও এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন—ফাইনান্স বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের ফারাবী, যিনি আগে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং একই বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী বকশী। একই সময় খাবার নিতে গিয়ে নাট্যকলা বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী মিনহাজও হামলার শিকার হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১১টার দিকে ফারাবী ও বকশী কাজলার একটি ক্যানটিনে খাবার খাচ্ছিলেন। এ সময় ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত হেলমেট ও মাস্ক পরে সেখানে ঢুকে হামলা চালায়। তাদের হাতে রামদা, হাতুড়ি ও পিস্তল ছিল বলে জানা গেছে। একপর্যায়ে হামলাকারীরা রামদা ঠেকিয়ে ফারাবী ও বকশীকে ক্যানটিন থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়।
একই সময় খাবার খেতে যাওয়া মিনহাজকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে পাঠান। কিছুক্ষণ পর মণ্ডলের মোড় এলাকা থেকে আহত ফারাবী এবং হবিবুর হলের সামনে থেকে বকশীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
দুই শিক্ষার্থীকে দুর্বৃত্তরা তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা মহাসড়কে কাঠের গুঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে পুলিশকে পরিস্থিতি শান্ত করে।
ভুক্তভোগী বকশী বলেন, কমপক্ষে ১০টা মোটরসাইকেল ছিল। সবাই হেলমেট পরা। আমাকে বাইকে তুলে নিতে চাইছিল। পরে নেমে গেলে আমাকে মারতে মারতে রিকশায় তোলে। রিকশায় করে অক্ট্রয় মোড়ের দিকে নিয়ে যায়। অন্ধকার জায়গায় বসিয়ে রাখে। কিছুক্ষণ পর তাদের কারও ফোন আসে, তারা বলে, আসলটা পেয়ে গেছি, ওকে ছেড়ে দে। এরপর প্রায় ৩০ মিনিট ঘোরানোর পর আমাকে ছেড়ে দেয়। তাদের কাউকে চিনতে পারিনি।
রাবি প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কাজলার ক্যানটিনে ফারাবী ও বকশী খাবার খাচ্ছিলেন। হঠাৎ কয়েকজন এসে অতর্কিত হামলা চালায়। সবাই হেলমেট পরা থাকায় কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছি, কিন্তু ততক্ষণে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে মতিহার থানা পুলিশকে জানানোর ব্যবস্থা করি।’
মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক বলেন, ‘দুজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। কারা হামলা করেছে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে জনি নামে একজনের নাম পাওয়া গেছে। কেন এবং কারা এ হামলা করেছে— তা উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে।’




Comments